রাষ্ট্রের কার্যাবলি || Functions of the state
রাষ্ট্রের কার্যাবলি
একটি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে রাষ্ট্র কী কাজ করে কিংবা রাষ্ট্র কী করতে পারে , আমাদের জানা দরকার । অর্থাৎ জনগণের জন্য রাষ্ট্র কী ধরনের সেবা প্রদান করে এবং এর সামর্থ্য কতটুকু এ পাঠ থেকে আমরা তা জানব মানুষের প্রয়োজনেই রাষ্ট্র গড়ে উঠেছে । মানব জীবনের সামগ্রিক কল্যাণ সাধনই রাষ্ট্রের কাজ । বিশ্লেষকদের মতে , রাষ্ট্র প্রধানত দুই ধরনের ভূমিকা পালন করে থাকে , যথা নিয়ন্ত্রণমূলক এবং কল্যাণমূলক এ দুই ধরনের ভূমিকার ভিত্তিতে আধুনিক রাষ্ট্রের কার্যাবলিকে দুটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায় , যেমন- অপরিহার্য বা মুখ্য কার্যাবলি এবং কল্যাণমূলক বা ঐচ্ছিক কার্যাবলি।
অপরিহার্য বা মুখ্য কার্যাবলি: রাষ্ট্রের অস্তিত্ত্ব , স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব এবং রাষ্ট্রে বসবাসরত জনগণের অধিকার সংরক্ষণের জন্য রাষ্ট্র যে সমস্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করে , সেগুলোকে অপরিহার্য বা মুখ্য কাজ করা হয় । রাষ্ট্রের অপরিহার্য কাজগুলো নিম্নরূপ:
আর . এম . ম্যাকাইভার তাঁর "The Modern State"-এ বলেছেন , আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করা রাষ্ট্রের প্রাথমিক কাজ বা দায়িত্ব । নাগরিকদের জীবন ও সম্পত্তির নিরাপত্তা এবং ব্যক্তি স্বাধীনতা রক্ষার নিশ্চয়তা থেকে রাষ্ট্র নামক সংগঠনের সৃষ্টি হয় । জনসাধারণকে আইন মেনে চলতে বাধ্য করা , সমাজের শাম্ভি ভঙ্গকারীদের শাস্তির বিধান করা এবং সামগ্রিক অভ্যন্তরীণ শান্তি - শৃঙ্খলা বজায় রাখা রাষ্ট্রের প্রধান কাজ। এ লক্ষ্যে রাষ্ট্র স্থানীয় , আঞ্চলিক এবং জাতীয় পর্যায়ে রাজনৈতিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে থাকে। রাষ্ট্র আইন - শৃঙ্খলা রক্ষার্থে পুলিশ ও অন্যান্য আধা - সামরিক বাহিনী গড়েছ তোলে। বাংলাদেশে পুলিশ, র্যাব, আনসার, গ্রাম প্রতিরক্ষা দা ইত্যাদি আইন - শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করছে।
জাতীয় নিরাপত্তা , স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা রাষ্ট্রের আরেকটি অপরিহার্ব কাজ। দেশের ভৌগোলিক অখস্ততা জন্য প্রতিরক্ষা বাহিনী গঠন ও পরিচালনা রাষ্ট্রের এবং বৈদেশিক আক্রমণ থেকে অপরিহার্য দায়িত্ব। আধুনিককালে প্রতিটি স্বাধীন রাষ্ট্রই শক্তিশালী প্রতিরক্ষা বাহিনী গড়ে তুলেছে । প্রতিরক্ষা বাহিনীর সামর্থ্য ও আধুনিকায়ন একটি রাষ্ট্রকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিশেষ সুবিধা প্রদান করে। যেমন - আমেরিকা , যুক্তরাষ্ট্র বা রাশিয়ার বিশ্বব্যাপী নেতৃত্ব প্রদানে তাদের দেশরক্ষা বাহিনীর বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। স্থল , নৌ ও বিমান বাহিনীর সমন্বয়ে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে ওঠে।
আন্তর্জাতিক অজ্ঞানে রাষ্ট্রকে পরিচিত করা , রাষ্ট্রীয় ভূখণ্ডে অবস্থিত সম্পদের ওপর দাবি প্রতিষ্ঠিত করা, অন্যান্য রাষ্ট্রের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন , বিভিন্ন চুক্তি সম্পাদন , আঞ্চলিক কোর্ট গঠন , বহির্বিশ্বে অর্থনৈতিক বাজার সৃষ্টি ও সম্প্রসারণ করা , বিদেশে অবস্থানরত দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা ও সেবা প্রদান করা ইত্যাদি হচ্ছে রাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিষয়ক অপরিহার্য কাজ । আইন প্রণয়ন , আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা রাষ্ট্রের মৌলিক কাজ । রাষ্ট্রীয় আইনসভা বা পার্লামেন্টের মাধ্যমে আইন প্রণীত হয় । দেশের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্ট , হাইকোর্ট , জজকোর্ট প্রভৃতি বিরোদ্ধে মাধ্যমে দেশের সুষ্ঠু বিচার ব্যবস্থা গড়ে তোলা রাষ্ট্রের আবশ্যিক কাজের মধ্যে পড়ে ।
রাষ্ট্রের দৈনন্দিন কার্যাবলি সম্পাদন , নিয়ন্ত্রণ ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য প্রত্যেক রাষ্ট্রে প্রশাসনিক কাঠামো গড়ে ওঠে । এ কাঠামোয় কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়োগ , তাদের কর্মবণ্টন ও নির্দেশ , কাজ তদারক এবং পরিচালনা করা রাষ্ট্রের বাধ্যতামূলক দায়িত্ব । অর্থ ও সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা এবং রাষ্ট্র পরিচালনায় অর্থ সংগ্রহ ও বণ্টন ব্যবস্থা গড়ে তোলা রাষ্ট্রের একটি মুখ্য কাজ । রাষ্ট্রের বিভিন্ন ধরনের কার্য সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য প্রচুর অর্থের প্রয়োজন রয়েছে । বিভিন্ন উৎস থেকে এ অর্থ সংগ্রহ করা রাষ্ট্রের আবশ্যিক কাজ । রাষ্ট্রের অধীন বিভিন্ন ব্যক্তি , প্রতিষ্ঠান , মালিকানার ওপর বাজনা ও কর নির্ধ এবং তা আদায় করা ও সুষ্ঠুভাবে ব্যয় করা রাষ্ট্রের অন্যতম দায়িত্ব।
রাষ্ট্র বাজেট প্রণয়ন , মুদ্রা প্রবর্তন ও মুদ্র বিনিয়োগের ব্যবস্থা , গণনা ও পরিমাপের একক নির্ধারণ এবং মূল্য নির্ধারণ করে থাকে । অর্থনৈতিক ব্যবস্থা পরিচালনা মুদ্রাস্ফীতি রোধ , নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা প্রভৃতিও রাষ্ট্রের মুখ্য কার্যাবলি ।
কল্যাণমূলক বা ঐহিক কার্যাবলি : বর্তমানে প্রত্যেকটি রাষ্ট্রই কল্যাণমূলক রাষ্ট্র হিসেবে নিজেদের দাবি করে । রাজনৈতিক তত্ত্ববিদরা এখন একমত যে , রাষ্ট্রের ভূমিকা শুধু আইন - শৃঙ্খলা রক্ষা এবং কর আদায়ের মধ্যেই সীমাবন্ধ হওয়া উচিত নয় । রাষ্ট্রকে অবশ্যই সমাজের সামগ্রিক উন্নতির জন্য , নাগরিকদের নৈতিক , সামাজিক , সাংস্কৃতিক , অর্থনৈতিক জীবনের পরিপূর্ণ বিকাশে কল্যাণমূলক ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে । জনকল্যাণ ও উন্নয়নে রাষ্ট্রের এ কাজগুলো ঐচ্ছিক বা গৌণ কাজ । যে রাষ্ট্র অর্থনৈতিকভাবে বভবেশি উন্নত তার ঐচ্ছিক কার্যাবলি ভভবেশি বিস্তৃত রাষ্ট্রের জনসাধারণকে শিক্ষিত করে তোলা রাষ্ট্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ । শিক্ষিত জনগোষ্ঠী রাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সম্পদ।
শিক্ষিত নাগরিক তার অধিকার দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্বন্ধে সচেতন থাকেন এবং দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হন । এজন্য রাষ্ট্র শিক্ষা বিস্তারের প্রতি অধিক গুরুত্ব প্রদান করে এবং শিক্ষা সুবিধা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয় । সরকার বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা প্রবর্তন করে নারী শিক্ষার ওপর গুরুত্বসহ ঝালক শিক্ষার বাকরা করে ও নিরক্ষরতা দূরীকরণের জন্য বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করে । জনসাধারণের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এবং বিদ্যমান বিভিন্ন বৈমা ও কুপ্রথা দূরীকরণে রাষ্ট্রদুত্বপূর্ণ সামাজিক ভূমিকা পালন করে । রাষ্ট্র তার নাগরিকদের স্বাস্থ্য রক্ষায় এবং অসুস্থদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে হাসপাতাল , দাতব্য চিকিৎসালয় , শিশুসদন , মাতৃমঙ্গল কেন্দ্র পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র , দেশব্যাপী অর্থায়ী হেলথ ক্যাম্পেইন প্রতিষ্ঠা প্রভৃতিও পরিচালনা করে । জবাস্থ্য রক্ষায় বিশুদ্ধ পানীর সুব্যবসা , ব্যাংদিষ্কাশন ব্যবস্থা , জোয় প্রতিরোধক ও প্রতিষেধক টিকা প্রদান প্রভৃতি সেবাও রাষ্ট্র প্রদান করে । এছাড়া যৌতুক ও বাবা গোত্রপ্রথা দূরীকরণ , খাদ্যবিবাহ রোধ এবং জেন্ডার সমতা প্রতিষ্ঠায় রাষ্ট্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
জনগণের নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য ও পণ্য , যেমন- চাল , ডাল , আটা , ময়দা , চিনি , তেল ইত্যাদি সরবরাহ প্রক্রিয়া সচল রাখা রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ কাজ । তদুপরি খাদ্য নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য উৎপাদন ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ , কৃষিতে ভর্তুকি প্রদান , সার , বীজ , কীটনাশক সরবরাহ , সেচের ব্যবস্থা করা , বাদ্য গুদামজাতকরণ প্রভৃতি রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ কাজ হিসেবে স্বীকৃত। জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে খাদ্যের চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে । তাই রাষ্ট্রকে বাদ্য নিরাপত্তায় পূর্বের তুলনায় অধিক মনোযোগ দিতে হচ্ছে।
বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে আশাব্যঞ্জক সাফল্য অর্জন করেছে । যে কোনো রাষ্ট্রের অর্থনেতিক উন্নতি তার শিল্প ও বাণিজ্যের উন্নয়ন ও প্রসারের সাথে সংশ্লিষ্ট । রাষ্ট্রে নিত্যনতুন শিল গড়ে তোলা , বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠায় শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীদের উৎসাহ ও ঋণ প্রদান , শিল্পজোন প্রতিষ্ঠা , ব্যবসায় - বাণিজ্যের প্রসার , উৎপাদিত পণ্যের বাজার সৃষ্টি ও রপ্তানির জন্য গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক ভূমিকা পালন করা রাষ্ট্রের কাজ । আমদানি নির্ভর না হয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্বনির্ভরতা অর্জন যে কোনো রাষ্ট্রের লক্ষ্য হওয়া উচিত। এজন্য বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত গবেষণার জন্য রাষ্ট্রকে অনেক বেশি নজর দিতে হয়। এছাড়া রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে কলকারখানা স্থাপন ও পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ এবং এর মাধ্যমে অধিক সংখ্যক লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি রাষ্ট্রের ঐচ্ছিক কাজ।
দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন , যথা : রাস্তাঘাট , সেতু , সড়ক , রেলপথ নৌ - চলাচল , বিমান যোগাযোগ ডাক , তার ও টেলিযোগাযোগ এবং যোগাযোগের আধুনিক প্রযুক্তির সাথে সংযুক্ত থাকা রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ঐহিক কাজ । বর্তমান বিশ্বে যোগাযোগ ব্যবস্থায় ব্যাপক বিপ্লব সাধিত হয়েছে । ইন্টারনেট , নেটওয়ার্কিং ও ভরজের ব্যাপক ব্যবহারের ফলে বিশ্বে পারস্পরিক যোগাযোগ অনেক বেড়ে গেছে। অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ঐচ্ছিক কাজ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে । সুষ্ঠু পরিবহন ও যোগাযোগ বাকলা গড়ে তোলা রাষ্ট্রের উন্নতির জন্য অপরিহার্য । জনগণের মধ্যে ঐক্য ও সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য রাষ্ট্রীয় ঐতিহ্য তুলে ধরা রাষ্ট্রের কাজ।
জাতীয়তাবোধ সৃষ্টিতে দেশীয় শিল্প , গান - বাজনা , আঞ্চলিক বৈচিত্র্য রক্ষা , লোকশিল্পের সংরক্ষণ , জাদুঘর প্রতিষ্ঠা , সাংস্কৃতিক আয়োজন এবং সাংস্কৃতিক বিনিময় রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ঐহিক কাজ।
জনগণের চিত্তবিনোদনের জন্য প্রয়োজনীয় সঞ্চ , খেলার মাঠ , পার্ক ও উদ্যান প্রতিষ্ঠা করা রাষ্ট্রের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। রাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ ঐচ্ছিক কাজ হলো জনগণের স্বাধীনতা এবং অধিকার রক্ষা করা । রাষ্ট্র জনগণের মত প্রকাশের স্বাধীনতা , চলাচলের স্বাধীনতা , রাজনীতিতে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করবে । এ লক্ষ্যে নির্দিষ্ট সময় অন্তর রাষ্ট্র অবাধ ও সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের আয়োজন করে ।
এছাড়া জনগণের রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনায় পরিবেশ সৃষ্টি , সংগঠন ও রাজনৈতিক দল গঠনের স্বাধীনতা , জনগণের বিপরীতমুখী স্বার্থের মধ্যে সমন্বয় সাধন , সংখ্যালঘুদের স্বার্থ সংরক্ষণ , সমাজে দুর্নীতি প্রতিরোধ , ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর অধিকার সম্ভক্ষণ , শরণার্থীদের আশ্রয় দান ইত্যাদি রাষ্ট্রের ঐচ্ছিক রাজনৈতিক কাজ। সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আধুনিক রাষ্ট্রসমূহ বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করে। রাষ্ট্রে বসবাসরত দরিদ্র , বিধবা , অনাথ ও প্রতিবন্ধীদের অর্থনৈতিক এবং অন্যান্য সুবিধা প্রদান করা , বেকারদের জন্য ভাড়া, বাবাদের জন্য বয়স্ক ভাতা , পেনশন প্রদান ইত্যাদি সামাজিক নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ রাষ্ট্রের কল্যাণমূলক কার্যাবলি হিসেবে অন্তর্ভূক্ত। রাষ্ট্রের বিশাল কর্মীবাহিনীকে পরিচালনা করা ও নিয়ন্ত্রণে রাখা রাষ্ট্রের ঐচ্ছিক কাজ।
শ্রমিকদের স্বার্থরক্ষার জন্য শ্রমনীতিমালা প্রণয়ন, ন্যূনতম সঠিক মজুরি ও কাজের সময় নির্ধারণ, কাজের পরিবেশ সৃষ্টি , বোনাস , ইন্স্যুরেন্স , পেনশন সুবিধা প্রদান , কর্মসংস্থান সৃষ্টি , প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ শ্রমিক তৈরি , কর্মরত বিদেশি শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষার জন্য শ্রম অফিসার নিয়োগ প্রভৃতি রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ কাজ । এছাড়া রাষ্ট্র বিবিধ উন্নয়নমূলক ও জনহিতকর কাজ সম্পাদন করে থাকে , যেমন- কৃষি ও সেচ ব্যবস্থার উন্নয়ন , বনায়ন কর্মসূচি , প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকাবিলা , প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য ও পুনর্বাসন , দুর্ভিক্ষ ও মহামারি প্রতিরোধ , নাগরিক সুবিধা সৃষ্টি , বিদ্যুতায়ন ও জ্বালানি সরবরাহ , প্রাকৃতিক সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা , নগরায়ণ , গ্রামীণ উন্নয়ন , কালোবাজারি রোধ , খাদ্যে ভেজাল প্রতিরোধ , নারী ও শিশু পাচার রোধ , অধিকার সচেতনতা সৃষ্টি ইত্যাদি বহুবিধ কাজ রাষ্ট্র সম্পাদন করে।
রাষ্ট্র একটি বৃহদাকার সংগঠন । প্রতিনিয়ত নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ রাষ্ট্রকে মোকাবিলা করতে হয় । তবে সার্বিকভাবে জনগণের কল্যাণ সাধনই রাষ্ট্রের উদ্দেশ্য । জনগণের চাহিদা অনুযায়ী বিশ্বের কল্যাণকামী রাষ্ট্রের মতো বাংলাদেশে রাষ্ট্রের ঐচ্ছিক কাজের পরিধি দিনদিন ব্যাপক ও বিস্তৃত হচ্ছে।