নৈতিকতা || Morality
নৈতিকতার ধারণা
মানব চরিত্রের একটি অপরিহার্য গুণ ও বৈশিষ্ট্য হলো নৈতিকতা। নৈতিকতা মানুষের মন থেকে উৎসারিত হয় এবং হিতাহিত বোধ বা জ্ঞানের বিকাশ লাভ করে। মানব চরিত্রের সবচেয়ে উন্নত এই গুণটি সুন্দর, সুশৃঙ্খল এবং সমৃদ্ধ সমাজ বিনির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নৈতিকতা এমন একটি গুণ বা মানসিক অবস্থা যা কোনো ব্যক্তিকে অপরের মঙ্গল কামনা করতে এবং মানুষের কল্যাণে ভালো কাজের অনুপ্রেরণা দেয়। নৈতিকতা আইন নয় কিন্তু আইনের মতোই গুরুত্বসহকারে মান্য করা হয়। নৈতিকতা সমাজ স্বীকৃত আচরণবিধি। নৈতিকতা মানুষের মনে উদ্ভব ও বিকশিত হয় এবং সমাজ তা লালন করে। নৈতিকতা নাগরিক সচেতনতার মানদণ্ড এবং সুশাসনের অন্তর্নিহিত শক্তি।
নৈতিকতা কি?
নৈতিকতা হচ্ছে নীতি ঘটিত বা নীতি সংক্রান্ত বিষয় যা সুনীতি, সৎ নীতি বা উৎকৃষ্ট নীতিকে ধারণ করে। অন্যভাবে বলা যায়, নৈতিকতা হলো এক ধরনের মানসিক অবস্থা যা কাউকে অপরের মঙ্গল কামনা করতে এবং সমাজের প্রেক্ষিতে ভালো কাজের অনুপ্রেরণা দেয়। নৈতিকতা বোধ মানুষকে ন্যায়-অন্যায় বা ভালো ও মন্দের মধ্যকার পার্থক্য করতে শেখায়। তাই সাধারণত যে সকল সামাজিক রীতিনীতি অনুসরণ করে মানুষ দৈনন্দিন কার্যাবলি সম্পাদন করে তাকে নৈতিকতা বলে। নৈতিকতা মানুষের কাজের ভালো-মন্দ নির্ধারণ করে। মানুষের কাজ, অভ্যাস ও আচরণের ভালো-মন্দের মাপকাঠি হলো নৈতিকতা ।
নৈতিকতা শব্দের অর্থ কি?
নৈতিকতা এর অর্থ হলো ভদ্রতা, চরিত্র, উত্তম আচরণ। এটি মূলত উদ্দেশ্য, সিদ্ধান্ত এবং কর্মের মধ্যকার ভালো-খারাপ,উচিত-অনুচিত এর পার্থক্যকারী।
নৈতিকতা (Morality) শব্দের উৎপত্তি
নৈতিকতার ইংরেজি প্রতিশব্দ 'Morality'। ইংরেজি Morality শব্দটির এসেছে ল্যাটিন 'Moralitas' থেকে। যার অর্থ আচরণ (Manner), চরিত্র (Character) বা যথার্থ আচরণ (Proper behaviour)। নৈতিকতা ভালো বা ন্যায়ের সমার্থক।
নৈতিকতা কাকে বলে?
নৈতিকতা বলতে মানুষের ভালো নীতিকে বোঝায়, যার মাধ্যমে ব্যক্তির নিজের এবং সমাজের কল্যাণ সাধিত হয়। নৈতিকতা হলো মানুষের অন্তর্নিহিত ধ্যান-ধারণার সমষ্টি যা মানুষের সুকুমার বৃত্তিকে বিকশিত করে তোলে। নৈতিক চরিত্রই মানুষকে সভ্যতার আসনে অধিষ্ঠিত রাখে। নৈতিকতা মানুষকে অধঃপতনের হাত থেকে রক্ষা করে সুপথে পরিচালিত করে। নৈতিকতা মানুষকে সততা, ন্যায়পরায়ণতা, দায়িত্বশীলতা, সহিষ্ণুতা অর্জনে উদ্বুদ্ধ করে। মানুষের সু-অভ্যাস ও সামাজিক রীতিনীতিই হলো নৈতিকতা। সাধারণত যেসব সামাজিক রীতিনীতি অনুসরণ করে মানুষ তার দৈনন্দিন কাজ সম্পাদন করে তাকেই নৈতিকতা বলে। মানুষের কোন কাজটি ভালো, কোন কাজটি মন্দ, নৈতিকতা তা নির্ধারণ করে। নৈতিকতা হলো মানুষের ভালো-মন্দ কাজের বিচারের মাপকাঠি।
নৈতিকতার সংজ্ঞা
নৈতিকতা সম্পর্কে উইলিয়াম সিলি বলেন, “মানুষের দৈনন্দিন কথাবার্তা, কাজের ভালো, উচিত, সঠিক শব্দমালা নীতিশাস্ত্রের নৈতিকতার মানদণ্ডের দ্বারা নির্ধারণ করা হয়।"
জোনাথান হেইট (Jonathan Haidt) বলেন, "ধর্ম, ঐতিহ্য এবং মানব আচরণ— এই তিনটি থেকেই নৈতিকতার উদ্ভব হয়েছে।"
নীতিশাস্ত্রবিদ ম্যুর নৈতিকতার একটি সংক্ষিপ্ত অথচ চমৎকার সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। ম্যুর বলেন, "যা কিছু শুভ তার প্রতি অনুরাগ এবং অশুভর প্রতি বিরাগই হচ্ছে নৈতিকতা।"
অতএব বলা যায়, দৈনন্দিন কার্যক্রম ও সামাজিক কর্মকাণ্ড সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য মানুষ যে সকল নীতি, আদর্শ এবং সামাজিক, ধর্মীয় ও আইনগত অনুশাসন মেনে চলে তার সমষ্টিই হলো নৈতিকতা ।
নব নৈতিকতার প্রবর্তক কে?
আনুষ্ঠানিক উচ্চশিক্ষাবিহীন স্বশিক্ষিত একজন মননশীল লেখক ও যুক্তিবাদী দার্শনিক আরজ আলী মাতুব্বর বাংলাদেশের সমাজে জেঁকে বসা ধর্মীয় গোঁড়ামি ও অন্ধ কুসংস্কারের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা নৈতিক আদর্শকে কুঠারাঘাত করে, তার স্হলে বস্তুবাদী দর্শন ও বিজ্ঞানের মাধ্যমে সত্য আবিষ্কার করে সত্য, ন্যায় ও বিজ্ঞানের যথাযথ নীতি পদ্ধতিভিত্তিক নব নৈতিক আদর্শের সমাজের কথা চিন্তা করেছেন৷ তাই আরজ আলী মাতব্বরকে নব নৈতিকতার প্রবর্তক বলা হয়।
নৈতিকতার বৈশিষ্ট্য বা বিভিন্ন দিক
নৈতিকতার বৈশিষ্ট্য বা বিভিন্ন দিক সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:
১. নৈতিক চেতনা: নৈতিকতার উল্লেখযোগ্য দিক নৈতিক চেতনা। ভাবাবেগে উদ্বুদ্ধ মানুষের এ চেতনা জাগ্রত করার জন্য নৈতিক শিক্ষা প্রয়োজন।
২. নৈতিক মানদণ্ড: নৈতিক আদর্শের মানদণ্ড অনুসারে মানুষের কার্যক্রমের ভালো, মন্দ, ন্যায়-অন্যায় ইত্যাদি নিরূপণ করা হয়।
৩. শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা: নৈতিকতা অভ্যন্তরীণ চিন্তাভাবনা ও মানসিক প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে সমাজে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করতে চায় ।
৪. নৈতিকতার উৎস: সমাজের প্রথা, আদর্শ, ধর্ম ও ন্যায়বোধ হতে নৈতিকতার জন্ম।
৫. সামগ্রিক নিয়ন্ত্রণ: নৈতিকতা মানুষের বাহ্যিক আচরণ নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি চিন্তাকেও নিয়ন্ত্রণ করে।
৬. নৈতিকতা লঙ্ঘনের শাস্তি: নৈতিকতা লঙ্ঘন করলে মানুষকে শাস্তি পেতে হয় না। কিন্তু সামাজিক ঘৃণা বা বিবেকের দংশন প্রতিবন্ধক হিসেবে কাজ করে।
৭. সর্বজনীনতা: নৈতিকতার ধারণা সর্বজনীন । নৈতিকতার বিধানগুলো মোটামুটিভাবে সব দেশের এবং সর্বকালের। মানুষ ইচ্ছা করলেই এগুলো পরিবর্তন করতে পারে না।
৮. নৈতিকতার উদ্দেশ্য: নৈতিকতার উদ্দেশ্য সৎ ও ন্যায়বান মানুষ সৃষ্টি করে সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনের সার্বিক উন্নতি সাধন এবং নীতিবোধ প্রতিষ্ঠা করা।
৯. নৈতিক বাধ্যবাধকতাবোধ: উচিত ও অনুচিতের সঙ্গে নৈতিক বাধ্যবাধকতাবোধ বিশেষভাবে জড়িত। কোনো একটি কাজকে উচিত মনে করলে তা করার এবং কোনো একটি কাজকে অনুচিত বলে মনে করলে তা না করার জন্য আমাদের একটি নৈতিকতাবোধ কাজ করে থাকে।
নৈতিকতাবোধ ও নৈতিক চেতনা সমৃদ্ধ মানুষই আদর্শ মানুষ। সুতরাং যে সমাজে নৈতিকতাসম্পন্ন মানুষ বেশি সে সমাজব্যবস্থা আদর্শ ও কল্যাণকর হিসেবে বিবেচিত হয়।
আইন ও নৈতিকতার সম্পর্ক
আইন ও নৈতিকতা এক বিষয় না হলেও উভয়ের মধ্যে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিদ্যমান। আইন চিরাচরিত প্রথা, ধর্মীয় অনুশাসন, বিচারকদের রায় ও আইনসংক্রান্ত গ্রন্থাবলির সমন্বয়ে সৃষ্টি। আর নৈতিকতা একান্তভাবেই মানুষের মন থেকে উৎপত্তি লাভ করে। মানুষের হিতাহিত জ্ঞান থেকে নৈতিকতার বিকাশ ঘটে। নৈতিকতা হলো মানুষের অন্তর্নিহিত ধ্যান-ধারণার সমষ্টি যা মানুষের সুকুমার বৃত্তিকে বিকশিত করে তোলে। উভয়ের সম্পর্কে রাষ্ট্রবিজ্ঞানিগণ বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি ব্যক্ত করেছেন। নিম্নে আইন ও নৈতিকতার মধ্যকার সাদৃশ্য বা সম্পর্ক আলোচনা করা হলো:
১. উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যগত সম্পর্ক: উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যের দিক দিয়ে উভয়ের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। উভয়ের উদ্দেশ্য ব্যক্তি ও সমাজের মঙ্গল বিধান করা। আইন সমাজের সুনাগরিক সৃষ্টির মাধ্যমে ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব বিকাশের পথকে সুগম করে শান্তিপূর্ণ জীবন নিশ্চিত করে ন্যায়-নীতি প্রতিষ্ঠা করে। পাশাপাশি মানব চরিত্রের কুপ্রবৃত্তিকে দমন করে উন্নত ও আদর্শ জীবন নিশ্চিত করা নৈতিকতার লক্ষ্য । প্লেটো তাঁর বিখ্যাত 'The Laws' গ্রন্থে বলেন, “আইনহীন জীবন ও পশুর জীবনের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই।” উভয়ের সংমিশ্রণে ভালো মানুষ ও ভালো দেশ গঠন সম্ভব ।
২. ব্যুৎপত্তিগত সম্পর্ক: উৎসগত দিক থেকেও উভয়ের মধ্যে সম্পর্ক বিদ্যমান। প্রথাগত বিধান, ধর্ম প্রভৃতি আইন ও নৈতিকতার উৎস। সামাজিক মূল্যবোধ (Social values) ও ধর্মীয় অনুশাসন থেকেই প্রচলিত নীতিবোধের জন্ম । আইন ও নৈতিকতাবোধের সমন্বিত আহ্বানেই সামাজিক বিধি-বিধানের সোপান নির্মিত হয়েছে। সমাজে নৈতিক মূল্যবোধের উন্নতির অর্থ আইন ব্যবস্থার উন্নতি। কেননা, মানুষের নীতিবোধকে উপেক্ষা করে কোনো আইন তৈরি হতে পারে না। যৌক্তিক আইন একটি দেশের নৈতিক মানের পরিচায়ক।
৩. বিষয়বস্তুগত সম্পর্ক: আইন ও নৈতিকতার আলোচ্য বিষয় হলো মানুষ ও সমাজ। সমাজবদ্ধ মানুষের নানা দিক নিয়ে আইন ও নৈতিকতা আলোচনা করে। মানুষের ভালো, মন্দ, ন্যায়-অন্যায়, উচিত-অনুচিত প্রভৃতি বিষয় আইন ও নৈতিকতার আলোচ্য বিষয়। রাষ্ট্রীয় সংগঠনের অনুপস্থিতিতে কতকগুলো নৈতিক বিধানের সাহায্যে সামাজিক শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করা হতো । অর্থাৎ মানুষের বিবেক-বুদ্ধি ও অভিজ্ঞতার মধ্যে আইন ও নৈতিকতার সহাবস্থান।
৪. একে অন্যের ওপর নির্ভরশীল: অনেক রাষ্ট্রবিজ্ঞানী মত পোষণ করেন যে, আইন নৈতিক বিধানের ওপর ভিত্তিশীল। অধ্যাপক গেটেল (Prof. R. G. Gettell) বলেন, প্রচলিত ন্যায়-নীতির ধারণা নৈতিকতার মানদণ্ড নির্ধারণ করে এবং এটাই স্বচ্ছ স্ফটিকের ন্যায় আইনশাস্ত্রে সঞ্চিত হয়। নৈতিকতার সংমিশ্রণে প্রণীত না হলে কোনো আইন স্বতঃস্ফূর্ত আনুগত্য লাভ করতে পারে না।
৫. একে অপরের ওপর প্রভাব বিস্তার করে: আইন ও নৈতিক বিধান একে অপরের ওপর প্রভাব বিস্তার করে। যে কাজ আইনসম্মত নয় তা নীতিবিরুদ্ধও বটে। যেমন- পূর্বে হিন্দুসমাজে সতীদাহ প্রথা রীতিসম্মত ছিল। কিন্তু বর্তমানে তা দণ্ডনীয় ও রীতিবিরুদ্ধ।
৬. পরিবর্তনশীলতা: সামাজিক পরিবর্তনের সাথে আইন ও নৈতিকতারও পরিবর্তন ঘটে। নতুন আইন প্রবর্তনের ফলে নৈতিকতার মানদণ্ডও পরিবর্তিত হয়। যেমন পুঁজিবাদী সমাজব্যবস্থায় আইনে নৈতিকতার মানদণ্ড একরকম, তেমন সমাজতান্ত্রিক শাসনে নৈতিকতার মানদণ্ড অনেকটা অন্যরকমের। কেননা, সমাজতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় আইনকানুন পুঁজিবাদী ব্যবস্থা থেকে অনেকাংশে ভিন্ন রকমের।
৭. মানুষের কল্যাণ সাধন: আইন ও নৈতিকতা উভয়ে সমাজবদ্ধ মানুষের কল্যাণ সাধন করে। মানুষের যা অকল্যাণকর আইন ও নৈতিকতা সে পথ পরিহার করার শিক্ষা দেয়। আইন মানুষের বাহ্যিক আচরণ নিয়ন্ত্রণ করে নাগরিকের কল্যাণ সাধন করে। আর নৈতিকতা মানুষের মনোজগৎকে নিয়ন্ত্রণ করে কল্যাণের দিকে পরিচালিত করে।
৮. সফলতার দিক থেকে: সাফল্যের দিক থেকে আইন ও নৈতিকতার মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিদ্যমান। আইনের সাফল্য অনেকটা নির্ভর করে নীতিবোধের ওপর। আইন সামাজিক নীতিবিরোধের আলোকে প্রণীত হলে তা সহজেই জনগণের নিকট স্বীকৃতি পায় এবং কার্যকর হয়।
পরিশেষে বলা যায় যে, আইন মনুষ্য সমাজ তার প্রয়োজনে তৈরি করে, যাতে সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা বিরাজ করে। আর নৈতিকতা হলো আধ্যাত্মিক বিষয় যা দ্বারা সমাজ ও ব্যক্তিজীবনকে আরও সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনা করা যায়।
আইন ও নৈতিকতার মধ্যে উপরিউক্ত অনেক সাদৃশ্য বিদ্যমান থাকলেও উভয়ের মধ্যে বেশ কিছু বৈসাদৃশ্য বা পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। তা নিম্নরূপ:
১. পরিধিগত পার্থক্য: নৈতিকতার পরিধি আইনের তুলনায় বেশ ব্যাপক। আইন কেবলমাত্র মানুষের বাহ্যিক আচরণ নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু নৈতিকতা বাহ্যিক ও মানসিক উভয় আচরণ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
২. মেনে চলার ক্ষেত্রে পার্থক্য: আইন মেনে চলা রাষ্ট্রের সকল নাগরিকের জন্য বাধ্যতামূলক। কিন্তু নৈতিকতা মেনে চলা ব্যক্তির একান্ত ইচ্ছার ওপর নির্ভরশীল। নৈতিকতা মেনে চলা বাধ্যতামূলক নয়।
৩. অনুমোদনের ক্ষেত্রে: আইন সমাজ কর্তৃক স্বীকৃত এবং এর পেছনে রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্বের অনুমোদন থাকে। কিন্তু নৈতিকতার পেছনে মানুষের মানবিক মূল্যবোধ ও সামাজিকতার স্বীকৃতি রয়েছে।
৪. শাস্তি প্রাপ্তির দিক থেকে: আইন ভঙ্গ করলে মানুষকে শাস্তির সম্মুখীন হতে হয়। কিন্তু নৈতিকতা ভঙ্গ করলে কোনো শাস্তি পেতে হয় না। তবে সামাজিক নিন্দা, ক্ষোভ ও প্রতিবাদের সম্মুখীন হতে হয়।
৫. সুস্পষ্টতার দিক থেকে: রাষ্ট্র কর্তৃক প্রণীত হয় বলে আইন অনেকটা সুস্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট। নৈতিকতা নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রণীত নয় বলে তা অনির্দিষ্ট ও সামাজিক রীতিনীতি নির্ভর।
৬. বিভিন্নতার ক্ষেত্রে: নৈতিক বিধানসমূহ সব দেশে সর্বকালেই প্রচলিত। মানুষ ইচ্ছে করলে রাতারাতি একে পরিবর্তন করতে পারে না। কিন্তু আইন সময়- প্রয়োজন অনুসারে পরিবর্তিত হতে পারে। মানুষ প্রয়োজনবোধে তা সংশোধন বা বাতিল করতে পারে।
৭. ন্যায়-অন্যায় প্রশ্নে: ন্যায়-অন্যায় প্রশ্নে আইন ও নৈতিকতার মধ্যে পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। নীতিগতভাবে যা অন্যায়, আইনের চোখে তা নাও হতে পারে। যেমন- মদপান নীতি বিরুদ্ধ কিন্তু সবসময় বেআইনী নয়। আবার যা আইনের চোখে দণ্ডনীয়, নৈতিক বিচারে তা দোষের নাও হতে পারে।
৮. প্রয়োগের ক্ষেত্রে: আইন সর্বজনীন এবং তা সমাজের সবার ক্ষেত্রে সমভাবে প্রযোজ্য। অন্যদিকে, নৈতিকতার প্রয়োগের বিষয়টি ব্যক্তির ইচ্ছার ওপর নির্ভরশীল। ব্যক্তিভেদে মানুষের নৈতিকতা মানা, না মানার বিষয়টির তারতম্য হয়ে থাকে।
পরিশেষে বলা যায়, আইন ও নৈতিকতার মধ্যে যদিও কিছু পার্থক্য লক্ষ্য করা যায় তবুও উভয়ের মধ্যে অত্যান্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিদ্যমান। কেননা আইন ও নৈতিকতা একে অপরের সাহায্য ও সহযোগিতা করে থাকে। তাই এরা একে অপরের পরিপূরক।
নৈতিকতা ও মূল্যবোধের সম্পর্ক
নৈতিকতা ও মূল্যবোধ দুটি শব্দের একই ধরনের বা কাছাকাছি অর্থ বোঝালেও শব্দ দুটোর মধ্যে কিছুটা পার্থক্য ধারণা করা যায়। কিন্তু দুটি শব্দ একটি অপরটির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। নৈতিকতা ও মূল্যবোধ শব্দ দুটির ব্যাখ্যা দর্শন শাস্ত্রীয় বিষয়। দর্শনশাস্ত্র নিয়ে কথা বলার যোগ্যতা বা শিক্ষা আমার নেই। সাধারণভাবে নৈতিকতা ও মূল্যবোধ নিয়েই আমার আলোচনা। নৈতিকতা ও মূল্যবোধের অভাবে আমাদের পরিবার সমাজ ও রাষ্ট্র আজ অবক্ষয়ের সম্মুখীন। পরিবার সমাজ ও রাষ্ট্র একই সুতায় গাঁথা।
সুতরাং পরিবারের অবক্ষয় দেখা দিলে তার প্রভাব পড়ে সমাজ ও রাষ্ট্রের ওপর। প্রথমে আমরা জানতে চেষ্টা করি নৈতিকতা বলতে কি বোঝায়। নৈতিকতা বলতে বোঝায় নীতি সম্পর্কিত বোধ বা অনুভূতি। এটি মানবিক গুণাবলী বা অন্য আরও অনেক গুণাগুণের সমন্বয়কে বোঝায়। নৈতিকতা মানুষের আচরণ বা চরিত্রকে প্রকাশ করে। মানুষের চরিত্রের আদর্শ বা নৈতিক গুণাবলী হলো নৈতিকতা।
অপরদিকে মূল্যবোধ বলতে বোঝায় মানুষের আচরণকে পরিচালনা করে যে সকল নীতি ও মানদণ্ড তা। মানুষের আচরণের মানদণ্ড তার নিজ নিজ বিশ্বাস ও নীতির ওপর নির্ভর করে। পৃথিবীর সব মানুষের বিশ্বাস ও নীতি এক হয় না। সততা হলো নিজের কাছে সৎ থাকা, নৈতিকতা হলো নিজে দায়মুক্ত থাকা; মূল্যবোধ হলো মানুষ আমার কাছে যা আশা করে তার চেয়ে ভালো কিছু করা। শত্রুর সঙ্গেও মিত্রতা করা। এর পেছনে মূল চালিকাশক্তি হলো বিশ্বাস, আশা ও ভালোবাসা। এ সবই হলো ধর্মের মূল দর্শন।
নৈতিক গুণাবলী কি কি
নৈতিক গুণাবলী এমন গুণাবলী বা বৈশিষ্ট্য যা নৈতিকভাবে ন্যায়পরায়ণ এবং পরিপূর্ণ জীবন পরিচালনার জন্য অপরিহার্য বলে বিবেচিত হয়। এই গুণগুলিকে প্রায়ই মৌলিক নীতি বলে মনে করা হয় যা একজন ব্যক্তির আচরণকে নির্দেশ করে এবং বিভিন্ন পরিস্থিতিতে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে।
কিছু সাধারণ নৈতিক গুণাবলীর মধ্যে রয়েছে:
সততা: অন্যদের সাথে আপনার সমস্ত মিথস্ক্রিয়ায় সত্যবাদী এবং আন্তরিক হওয়া।
ন্যায়পারাণ: আপনার ক্রিয়া এবং বিশ্বাসের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া এবং আপনি যা জানেন তা করা সঠিক, এমনকি যখন এটি কঠিন হয়।
সাহস: ভয় বা প্রতিকূলতার মুখেও যা সঠিক তা করার শক্তি থাকা।
সহানুভূতি: অন্যদের প্রতি দয়া এবং সহানুভূতি দেখানো এবং প্রয়োজনে সাহায্য করতে ইচ্ছুক।
দায়িত্ব: আপনার কর্মের মালিকানা নেওয়া এবং তাদের পরিণতির জন্য দায়বদ্ধ হওয়া।
ক্ষমা: যারা আপনার প্রতি অন্যায় করেছে তাদের প্রতি বিরক্তি এবং রাগ ছেড়ে দেওয়া।
নম্রতা: আপনার নিজের সীমাবদ্ধতা এবং দুর্বলতাগুলিকে স্বীকৃতি দেওয়া এবং অন্যদের কাছ থেকে শিখতে ইচ্ছুক।
এগুলি হল অনেক নৈতিক গুণাবলীর কয়েকটি উদাহরণ যা মানুষ তাদের জীবনে গড়ে তোলার চেষ্টা করতে পারে। এই গুণগুলিকে মূর্ত করে, ব্যক্তিরা তাদের ক্রিয়াকলাপে আরও গুণী এবং নৈতিক হয়ে উঠতে পারে এবং আরও অর্থপূর্ণ এবং পরিপূর্ণ জীবনযাপন করতে পারে।
মূল্যবোধ ও আচরণের মধ্যে পার্থক্য
মূল্যবোধ এবং আচরণ সম্পর্কিত কিন্তু স্বতন্ত্র ধারণা। মূল্যবোধ হল বিশ্বাস বা নীতি যা আমাদের কর্ম ও সিদ্ধান্তকে নির্দেশ করে। তারা প্রতিনিধিত্ব করে যা আমরা জীবনে গুরুত্বপূর্ণ এবং অর্থবহ বলে মনে করি। অন্যদিকে, আচরণ বলতে আমরা বিভিন্ন পরিস্থিতিতে প্রতিক্রিয়া হিসাবে নেওয়া ক্রিয়াগুলিকে বোঝায়।
মূল্যবোধগুলি প্রায়শই আমাদের সাংস্কৃতিক পটভূমি, পারিবারিক লালন-পালন, শিক্ষা এবং জীবনের অভিজ্ঞতা দ্বারা আকৃতির হয়। তারা আমাদের মনোভাব, বিশ্বাস এবং আচরণকে প্রভাবিত করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, যদি একজন ব্যক্তি সততাকে মূল্য দেয়, তবে তারা অন্যদের সাথে তাদের মিথস্ক্রিয়ায় সত্যবাদী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। যাইহোক, শুধুমাত্র মানগুলি গ্যারান্টি দেয় না যে একজন ব্যক্তি একটি নির্দিষ্ট উপায়ে আচরণ করবে। এটি কারণ আচরণ অন্যান্য কারণ যেমন আবেগ, সামাজিক চাপ এবং পরিস্থিতিগত প্রেক্ষাপট দ্বারা প্রভাবিত হয়।
আচরণ সময়ের সাথে সাথে আমাদের মূল্যবোধকেও আকার দিতে পারে। যখন আমরা বারবার একটি নির্দিষ্ট উপায়ে কাজ করি, তখন এটি একটি অভ্যাস বা আমাদের পরিচয়ের অংশ হয়ে উঠতে পারে। উদাহরণ স্বরূপ, আমরা যদি ক্রমাগতভাবে সদয় ও সহানুভূতিশীল আচরণ করি, তাহলে আমরা হয়তো এই গুণগুলোকে আরও বেশি মূল্য দিতে পারি।
সংক্ষেপে, মান এবং আচরণ পরস্পর সংযুক্ত কিন্তু স্বতন্ত্র ধারণা। মূল্যবোধ হল বিশ্বাস যা আমাদের ক্রিয়া এবং সিদ্ধান্তগুলিকে নির্দেশ করে, যখন আচরণ হল প্রকৃত ক্রিয়া যা আমরা বিভিন্ন পরিস্থিতিতে প্রতিক্রিয়া হিসাবে করি।
নৈতিক শিক্ষার বৈশিষ্ট্য
নৈতিক শিক্ষা হল একজন ব্যক্তির নৈতিক ও নৈতিক মূল্যবোধের বিকাশের প্রক্রিয়া। এটি একটি জীবনব্যাপী প্রক্রিয়া যা অল্প বয়সে শুরু হয় এবং সারা জীবন চলতে থাকে। এখানে নৈতিক শিক্ষার কিছু মূল বৈশিষ্ট্য রয়েছে:
১. মূল্যবোধ ভিত্তিক: নৈতিক শিক্ষা মূল্যবোধ এবং নীতির উপর ভিত্তি করে যা নৈতিক আচরণকে নির্দেশ করে। এটি ব্যক্তিদের সততা, সম্মান, দায়িত্ব, ন্যায্যতা, সহানুভূতি এবং সহানুভূতির মতো মূল্যবোধ বুঝতে এবং উপলব্ধি করতে শেখায়।
২. উন্নয়নমূলক: নৈতিক শিক্ষা একটি ধীরে ধীরে এবং ক্রমাগত প্রক্রিয়া যা ব্যক্তি বৃদ্ধি এবং পরিপক্ক হওয়ার সাথে সাথে বিকশিত হয়। এটি সহজ ধারণা দিয়ে শুরু হয় এবং আরও জটিল ধারণা এবং আচরণে অগ্রসর হয়।
৩. প্রাসঙ্গিক: নৈতিক শিক্ষা বাস্তব জীবনের পরিস্থিতি এবং অভিজ্ঞতার মধ্যে নিহিত। এটি ব্যক্তিদের বিভিন্ন প্রেক্ষাপট এবং পরিস্থিতিতে নৈতিক নীতিগুলি বুঝতে এবং প্রয়োগ করতে সহায়তা করে।
৪. সহযোগিতামূলক: নৈতিক শিক্ষার মধ্যে শিক্ষাবিদ, পিতামাতা এবং সম্প্রদায়ের মধ্যে সহযোগিতা জড়িত। ব্যক্তির মধ্যে নৈতিক ও নৈতিক মূল্যবোধ জাগিয়ে তোলার জন্য একটি সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।
৫. প্রতিফলিত: নৈতিক শিক্ষা ব্যক্তিদের তাদের মূল্যবোধ, বিশ্বাস এবং আচরণের প্রতিফলন করতে উৎসাহিত করে। এটি সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা এবং আত্ম-সচেতনতা প্রচার করে, যা নৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
৬. আকর্ষক: নৈতিক শিক্ষা আকর্ষণীয় এবং ইন্টারেক্টিভ। এতে গল্প বলা, ভূমিকা পালন, আলোচনা এবং বিতর্কের মতো ক্রিয়াকলাপ জড়িত যা নীতিশাস্ত্র এবং নৈতিকতা সম্পর্কে শেখাকে মজাদার এবং অর্থবহ করে তোলে।
৭. অন্তর্ভুক্তিমূলক: নৈতিক শিক্ষা বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি এবং সংস্কৃতির অন্তর্ভুক্ত। এটি ব্যক্তিদের মূল্যবোধ এবং বিশ্বাসের পার্থক্যকে সম্মান করে এবং প্রশংসা করে এবং সহনশীলতা এবং বোঝার উৎসাহ দেয়।
দৈনন্দিন জীবনে নৈতিকতা
নৈতিকতা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে কারণ তারা আমাদের আচরণ এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়াকে নির্দেশ করে। দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন দিকগুলিতে নীতিশাস্ত্র প্রয়োগ করা যেতে পারে এমন কিছু উপায় এখানে রয়েছে:
ব্যক্তিগত সম্পর্ক: স্বাস্থ্যকর এবং সম্মানজনক সম্পর্ক বজায় রাখার ক্ষেত্রে নৈতিক বিবেচনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সততা, দয়া এবং সম্মানের সাথে অন্যদের সাথে আচরণ করা ব্যক্তিগত মিথস্ক্রিয়াগুলির মধ্যে নৈতিক আচরণের ভিত্তি তৈরি করে।
সততা ও সততা: জীবনের সকল ক্ষেত্রে সততা ও সততা বজায় রাখা অপরিহার্য। সত্যবাদী হওয়া এবং সততার সাথে কাজ করা ব্যক্তিগত এবং পেশাদার সম্পর্কের মধ্যে আস্থা এবং বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি করে।
পেশাগত আচরণ: নৈতিক আচরণ কর্মক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে সহকর্মী, ক্লায়েন্ট এবং উর্ধ্বতনদের প্রতি সৎ, নির্ভরযোগ্য এবং শ্রদ্ধাশীল হওয়া অন্তর্ভুক্ত। নৈতিক আচরণের মধ্যে গোপনীয়তা বজায় রাখা, স্বার্থের দ্বন্দ্ব এড়ানো এবং ন্যায্যতা ও সমতা প্রচার করা জড়িত।
ভোক্তাদের পছন্দ: নৈতিক বিবেচনা ভোক্তা হিসেবে আমাদের পছন্দকে প্রভাবিত করতে পারে। টেকসই অনুশীলন বা ন্যায্য বাণিজ্য নীতির মতো আমাদের মূল্যবোধের সাথে সারিবদ্ধ কোম্পানিগুলিকে সমর্থন করে, আমরা আরও নৈতিক এবং দায়িত্বশীল বাজারে অবদান রাখি।
পরিবেশগত দায়িত্ব: পরিবেশের উপর আমাদের প্রভাব সম্পর্কে সচেতন হওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ নৈতিক বিবেচনা। বর্জ্য হ্রাস, সম্পদ সংরক্ষণ এবং টেকসই অনুশীলনকে সমর্থন করে এমন পছন্দগুলি ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য একটি স্বাস্থ্যকর গ্রহকে উন্নীত করতে সাহায্য করতে পারে।
সামাজিক দায়বদ্ধতা: নৈতিক আচরণ সমাজের সদস্য হিসেবে আমাদের দায়িত্বের মধ্যে প্রসারিত। এর মধ্যে রয়েছে অন্যের অধিকার এবং মর্যাদাকে সম্মান করা, সামাজিক ন্যায়বিচার প্রচার করা এবং স্বেচ্ছাসেবী, অনুদান বা অ্যাডভোকেসির মাধ্যমে সম্প্রদায়ের জন্য ইতিবাচকভাবে অবদান রাখা।
ডিজিটাল এথিক্স: ডিজিটাল যুগে, আমাদের অনলাইন মিথস্ক্রিয়াতে নৈতিক বিবেচনা প্রাসঙ্গিক। অন্যের গোপনীয়তাকে সম্মান করা, সাইবার বুলিং থেকে বিরত থাকা, চুরি এড়ানো এবং ভালো ডিজিটাল নাগরিকত্ব অনুশীলন করা ডিজিটাল নীতিশাস্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ দিক।
নৈতিক খরচ: শ্রমিক, প্রাণী এবং পরিবেশের উপর আমাদের খরচ পছন্দের প্রভাব বিবেচনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ন্যায্য বাণিজ্য, টেকসই এবং নিষ্ঠুরতা-মুক্ত পণ্যকে সমর্থন করা এবং শোষণমূলক অভ্যাসগুলি এড়ানো নৈতিক ব্যবহারকে উন্নীত করতে সাহায্য করে।
স্বাস্থ্য এবং সুস্থতা: স্বাস্থ্যের বিষয়ে নৈতিক সিদ্ধান্তের মধ্যে আমাদের নিজের এবং অন্যের মঙ্গলকে সম্মান করা জড়িত। এর মধ্যে রয়েছে ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন সিদ্ধান্ত নেওয়া, স্ব-যত্ন অনুশীলন করা এবং সহানুভূতি, সমর্থন এবং সহানুভূতির মাধ্যমে অন্যদের মঙ্গল প্রচার করা।
নাগরিক নিযুক্তি: গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় জড়িত হওয়া এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের বিষয়গুলির পক্ষে সমর্থন করা নৈতিক আচরণের সাথে সারিবদ্ধ। নাগরিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করা, উদ্বেগ প্রকাশ করা এবং ইতিবাচক পরিবর্তনের দিকে কাজ করা আরও ন্যায়সঙ্গত এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজে অবদান রাখতে পারে।
মনে রাখবেন যে নৈতিকতা সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় এবং দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গির উপর ভিত্তি করে পরিবর্তিত হতে পারে। আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং নৈতিক সমাজ গঠনের জন্য বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি বিবেচনা করা এবং খোলামেলা সংলাপে জড়িত হওয়া অপরিহার্য।
আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর জানতে প্রশ্নের উপর ক্লিক করুন: