মহাকাশ অভিযান কি? || What is Space Exploration?
মহাকাশ অভিযান
মহাশূন্যের রহস্য আবিষ্কারের উদ্দেশ্যে মহাকাশচারীসহ কিংবা মহাকাশচারী ছাড়াই পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির বাঁধন কাটিয়ে পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে কমপক্ষে একশত কিলোমিটার উপরে বায়ুমণ্ডলের বাইরে গিয়ে কোনো মহাকাশযান কর্তৃক চালিত অনুসন্ধান বা অভিযানকে মহাকাশ অভিযান বলা হয়। পৃথিবীর বাইরে মহাশূন্যে সম্পূর্ণ নতুন একটি মহাজাগতিক বিশ্বের আবিষ্কার সকলের মনকেই আন্দোলিত করে। প্রতিনিয়ত মহাবিশ্বকে জানার অবিরাম চেষ্টা চলছে; হচ্ছে বিস্তর গবেষণা।
মহাকাশ অভিযান কি?
মহাকাশ অভিযানের কতিপয় ঘটনা
২. ৪ অক্টোবর, ১৯৫৭ সালে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন পৃথিবীর প্রথম উপগ্রহ ' স্পুটনিক -১ মহাকাশে প্রেরণ করে।
৩. ' ভস্টক -১ ' বিশ্বের প্রথম মানুষ বহনকারী সোভিয়েত মহাকাশযান। ১২ এপ্রিল , ১৯৬১ সালে রাশিয়ার মহাকাশযাত্র ফরি গ্যাগারিন প্রথম মানুষ হিসেবে মহাশূন্য ভ্রমণ করেন।
৪. ১৬ জানুয়ারি , ১৯৬৩ সালে বিশ্বের ১ম মহিলা হিসেবে সোভিয়েত ইউনিয়নের ভ্যালেনটিনা তেরেসকোভা ' ভস্টক -৬ ' এ করে আটচল্লিশবার পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করেন।
৫. ' অ্যাপোলো -১১ তে করে ২০ জুলাই , ১৯৬৯ সালে বিশ্বের সর্বপ্রথম মানুষ হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিল আর্মস্ট্রং ও এডউইন অলড্রিন চাঁদে অবতরণ করেন।
৬. শুক্রগ্রহে ১৯৭০ সালে ' ভেনেরা -৭ ' অবতরণ করে সেখান থেকে ২০ মিনিট যাবৎ পৃথিবীতে সরাসরি তথ্য প্রেরণ করে। ১৯৭১ সালে ' মার্স -৩ ' মিশনের মাধ্যমে সর্বপ্রথম মঙ্গলগ্রহ থেকে সরাসরি পৃথিবীতে ২০ সেকেন্ড যাবৎ তথ্য প্রেরণ করা হয়।
৭. ১২ এপ্রিল , ১৯৮১ সালে যুক্তরাষ্ট্র সর্বপ্রথম স্পেস শাটল উৎক্ষেপণ করে।
মহাকাশ অভিযানের জন্য কোনো মহাকাশযানের ঘণ্টায় প্রায় ৩০,০০০ মাইল (৪৮,০০০ কি.মি.) গতিবেগ প্রয়োজন। এটি শব্দের গতিবেগ থেকে প্রায় আটগুণ বেশি। মহাকাশযানকে আবার পৃথিবীতে ফেরানোর ক্ষেত্রে এই প্রচণ্ড গতিতে বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করার সময় বাতাসের ঘর্ষণে সৃষ্ট তাপকে বিক্রিরণ করে মহাকাশযানের গতিবেগ স্বাভাবিক করতে হয়। মহাশূন্যে বসে গবেষণাকার্য পরিচালনার জন্য পৃথিবীর কক্ষপথে স্পেস স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে। নির্দিষ্ট সময় অন্তর পৃথিবী থেকে গবেষকদের একটি দল এ স্টেশনে গিয়ে অবস্থান করেন এবং আধুনিক সব প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতির মাধ্যমে দূর নক্ষত্রসমূহের ওপর গবেষণাকার্য পরিচালনা করেন।
মহাকাশ অভিযানের গুরুত্ব
২. কমিউনিকেশন স্যাটেলাইটের মাধ্যমে পৃথিবীর একপ্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে কন্ঠস্বর , ছবি ও তথ্য মুহূর্তেই পাঠানো যায়।
৩. কৃত্রিম ভূ - উপগ্রহের মাধ্যমে সংগৃহীত তথ্য দ্বারা বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর প্রাকৃতিক সম্পদগুলোর ব্যবহার পদ্ধতির উন্নয়ন সাধন করেছেন।
৪. বায়ুমণ্ডল ও আবহাওয়া সম্পর্কিত সকল তথ্যই কৃত্রিম ভূ - উপগ্রহ ব্যবহার করে সংগ্রহ করা হয়।
৫. পৃথিবীর অনেক দেশ তাদের দেশের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে পৃথিবী পর্যবেক্ষণকারী স্যাটেলাইটগুলোর সহায়তা নিচ্ছে , যা নৌ , বিমান ও সেনাবাহিনীর মতোই গুরুত্বপূর্ণ।
৬. হাবল টেলিস্কোপে তোলা গ্রহ - নক্ষত্রের ছবি বিজ্ঞানের জগতে নতুন দিগন্ত সৃষ্টি করেছে। কৃত্রিম ভূ - উপগ্রহ ও রোবটিক মহাকাশযানের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা সৌরজগৎ সম্পর্কিত অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করেন।