তথ্য প্রযুক্তির অবদান || Tathya prayuktir abadana

 প্রযুক্তি কী? 
গ্রিক শব্দ Techne (যার অর্থ হলো আর্ট বা শিল্প, কারু কিংবা হাতের দক্ষতা) এবং logia- এ দুয়ের সমন্বয়ে টেকনোলজি শব্দটি গঠিত, যার শব্দগত অর্থ হলো প্রযুক্তি। প্রযুক্তি বলতে সাধারণভাবে কতিপয় কৌশল ও প্রক্রিয়ার সমন্বিত জ্ঞানকে বুঝায়। এটি কোনো মেশিন, কমপিউটার বা ডিভাইস সংশ্লিষ্ট হতে পারে। যার ফলে যে কোনো ব্যক্তি এ সম্পর্কে বিস্তারিত না জেনেও এগুলোকে ব্যবহার করতে সক্ষম হয়।
তথ্য প্রযুক্তির অবদান

যোগাযোগ প্রযুক্তি কি? 
যোগাযোগ প্রযুক্তি বা কমিউনিকেশন টেকনোলজি হলো কম্পিউটার বা কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইসের মাধ্যমে তথ্য আদান - প্রদান ব্যবস্থাসংশ্লিষ্ট প্রযুক্তি। এক কথায় যে প্রযুক্তির সাহায্যে নির্ভরযোগ্য উপায়ে উৎস হতে গন্তব্যে ডেটা কমিউনিকেশন প্রক্রিয়াটি পরিচালিত হতে পারে, তাকেই যোগাযোগ প্রযুক্তি বা কমিউনিকেশন টেকনোলজি বলা হয়ে থাকে। যেমন - টেলিফোন, মোবাইল, ইন্টারনেট প্রভৃতি।

তথ্য প্রযুক্তি কী?
তথ্য প্রযুক্তি করে সাধারণ তথ্য কথা এবং একে ব্যবহার করার প্রযুক্তিকেই বুঝানো হয়। এতে দেশ টেকনোলজি (Information Technology - IT) নামেও অভিহিত করা হয়।
 তথ্য প্রযুক্তি মূলত একটি সমন্বিত প্রযুক্তি, যা যোগাযোগ, টেলিযোগাযোগ, অডিও ভিডিও, কম্পিউটিং, সম্প্রচারসহ আরো বহুবিধ প্রযুক্তির সম্মিলনে দীর্ঘদিন ধরে চর্চার কালে সমৃদ্ধি লাভ করে তথ্য প্রযুক্তিরূপে আবির্ভূত হয়েছে। সার্বিকভাবে বলতে গেলে, কম্পিউটার ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যমে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ, ক্ষনিময় বা পরিবেশনের ব্যবস্থাকে তথ্য প্রযুক্তি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। 

তথ্য প্রযুক্তির সাথে যোগাযোগ মাধ্যমের রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক। তাই বর্তমানে তথ্য প্রযুক্তিকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (Information and Communication Technology - ICT) বলা হয়। বাংলাদেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির নীতিমালা অনুসারে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি হলো “যেকোনো প্রকারের উদ্যের উৎপত্তি সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াকরণ, সঞ্চালন ও বিচ্ছুরণে ব্যবহৃত প্রযুক্তি।"

বর্তমানে পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশেই তথ্যের অবাধ প্রবাহ এবং সাধারণ জনগণের তথ্য পাওয়ার অধিকারকে আইন করে বৈধতা দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি এ উদ্দেশ্যে বাংলাদেশেও এমন একটি আইন প্রণীত হয়েছে, যা তথ্য অধিকার ২০০৯ নামে পরিচিত। এ সব কিছুর উদ্দেশ্যই হচ্ছে আগামী বিশ্বকে একটি বিজ্ঞানভিত্তিক সমাজে পরিণত করা, যার মূলভিত্তি হবে ব্যাপক তথ্যের অবাধ প্রবাহ। 

তথ্য প্রযুক্তির দান
আধুনিক সভ্যতার ক্রমবিকাশে তথ্য প্রযুক্তির প্রভাব অপরিসীম। কম্পিউটারের নির্ভুল কর্ম সম্পাদন, দ্রুতগতি, স্মৃতি, স্বয়ংক্রিয় কর্মসম্পাদন, নেটওয়ার্ক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে তথ্য আদান - প্রদান, যোগাযোগ ইত্যাদি বৈশিষ্ট্যের জন্য তথ্য প্রযুক্তির প্রয়োগক্ষেত্র আজ সুবিস্তৃত। তথ্য প্রযুক্তির উল্লেখযোগ্য অবদান হলো-
১. অপচয় রোধ করে এবং সময়সাশ্রয়ী হয়।
২. তথ্যের প্রাপ্যতা সহজ হয়।
৩. তাৎক্ষণিক যোগাযোগ সম্ভব হয়। ফোন, ফ্যাক্স, ইন্টারনেট, ই - মেইল, SMS, MMS প্রভৃতি এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
৪. প্রশিক্ষণ ও সংশ্লিষ্ট কর্মক্যালের গতিকে ত্বরান্বিত করে। 
৫. সর্বক্ষেত্রে দক্ষতা বৃদ্ধি পায়। 
৬. ব্যবসায় - বাণিজ্যে সাতজনক প্রক্রিয়া সৃষ্টি করে।
৭. ই - কমার্সের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী পণ্যের বাজার সৃষ্টি করা হয়েছে।
৮. ঘরে বসেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় জিনিসের অর্ডার দেয়া যায়।
৯. শিল্প প্রতিষ্ঠানে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার মনুষ্যতি অপচয় কমায়।
১০. মানবসম্পদের উন্নয়ন ঘটায়।
১১. ঘরে বসেই অনলাইনে বিশ্বের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা গ্রহণ করা যায়।
১২. ই - গভর্নেন্স চালুর মাধ্যমে সরকারের বিভিন্ন দরের মধ্যে সমন্বয় ঘটানো যায় । 
১৩. সিটিজেন চার্টারের মতো নাগরিক সুবিধাগুলো ঘরে বসেই পাওয়া যায়।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url