কৃষির পরিধি ও পরিসর || Krisir paridhi O parisar

কৃষি কি?

কৃষি হলো ভূমি উপর প্রচুর পরিমাণে ফসল চাষ এবং পালন করা। এটি একটি প্রাচীন ও গুরুত্বপূর্ণ কারণে একটি প্রাথমিক ঐতিহাসিক কাজ, যা মানুষের খাদ্য প্রস্তুতির জন্য প্রধান উপাদান হিসেবে মনোনিবেশ করা হয়েছে। কৃষির মাধ্যমে ফসল চাষ, ফলন প্রবর্দ্ধন, এবং প্রাণীসহ বিভিন্ন প্রকারের প্রাকৃতিক উপাদান পোষণ দেওয়া হয়। এটি বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে হতে পারে বা কৃষকের জীবনের পার্থক্য মেটাতে সাহায্য করতে পারে।

কৃষি শিক্ষা কি?

কৃষি শিক্ষা হলো এমন একটি শিক্ষার ক্ষেত্র যেখানে শিক্ষার্থীদেরকে কৃষি বা কৃষি সংবাদ অনুষ্ঠানে শিক্ষিত করা হয়। এই শিক্ষার মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের কৃষি ও সংবাদ বিষয়ক জ্ঞান বৃদ্ধি করা হয়, যাতে তারা এই ক্ষেত্রে একে অপরকে সহায় করতে সক্ষম হোক এবং উন্নত কৃষি পদ্ধতির মাধ্যমে উন্নত কৃষি তত্ত্ব অনুভব করতে পারে।

কৃষি ঋণ কি?

কৃষি ঋণ হলো এমন একটি ঋণ যা কৃষকদের জন্য প্রযোজ্য হয় এবং যা কৃষি কাজে ব্যয় হতে সাহায্য করার জন্য নেওয়া হয়। এই ঋণগুলি সাধারণভাবে কৃষি উন্নতকরণ, জলবায়ু পরিবর্তনে মোকাবিলা, উন্নত কৃষি প্রযুক্তি, কৃষি উপকরণ ক্রয়, বীজ ক্রয় এবং সাধারিত কৃষি প্রক্রিয়াদি সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়। কৃষি ঋণগুলি সাধারণভাবে কৃষকদের পূর্ণ বা অংশকৃত ঋণ প্রদানের মাধ্যমে হয়, এবং এই ঋণগুলির শর্তাদি মেয়াদ, সুদের হার, পরিশ্রমের পরিমাণ এবং অন্যান্য শর্তাগুলি থাকতে পারে। এই মাধ্যমে কৃষকরা আরও উন্নত কৃষি পদ্ধতিতে কাজ করতে পারে এবং তাদের উৎপাদন বা আয় বাড়াতে সহায়ক হতে পারে।

কৃষি প্রযুক্তি কী?
কৃষি প্রযুক্তি হলো সমৃদ্ধি বা প্রগতির দিকে কৃষিতে বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করা। এটি কৃষিতে উন্নতমানের লক্ষ্যে নতুন ও উন্নত প্রযুক্তিগুলির অনুসন্ধান এবং তা ব্যবহারের জন্য প্রযুক্তিগত সহায়কসেবা তৈরি করে। এটি প্রধানভাবে কৃষিতে উন্নতমানের ও উত্তরমুলক প্রক্রিয়াগুলি, যেমন সৃজনশীল কৃষি, জৈব কৃষি, স্থায়ী কৃষি, রবোটিক্স, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, সেন্সর প্রযুক্তি, ডেটা অ্যানালিটিক্স, এবং অন্যান্য কৃষি তথা শ্রমসংযোজন বিষয়ে প্রযুক্তির ব্যবহারে ভিন্ন ভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করে। এই প্রযুক্তিগুলির মাধ্যমে কৃষকরা উন্নত ও দক্ষতার সাথে কৃষি করতে পারে এবং উন্নত উৎপাদন সাধারিত হতে পারে।

কৃষি শুমারি কী?
কৃষি শুমারি হলো একটি কৃষি ক্ষেত্রের যাত্রা অথবা প্রকল্পের উদ্দীপনা ও মূল্যায়ন করার প্রক্রিয়া। এটি কৃষি বিষয়ক একটি রচনা, প্রস্তুতি, বা প্রস্তুত কৃষি পরিকল্পনা হতে পারে, যা অভিজ্ঞান, পরিকল্পনা, এবং বিচারে ভিত্তি করে থাকে। এই প্রক্রিয়াটির মাধ্যমে একটি প্রকল্পের কৃষি বা কৃষি সংক্রান্ত বিভিন্ন দিকের মানসিক, প্রযুক্তিগত, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক দিক নিরূপণ করা হয়।

বাংলাদেশের কৃষি সমস্যা ও সমাধান
বাংলাদেশে কৃষি সমস্যাগুলি অনেকগুলি রয়েছে, এবং এগুলির সমাধানের জন্য মূল্যবান পথগুলি আছে:
1. জলাভাষ্য ও সেচ: বাংলাদেশে অধিকাংশ কৃষি উৎপাদন আবহাওয়ায় নির্ভর করে, এবং অপ্রয়োজনীয় জলাভাষ্য সমস্যার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে। সুস্থ জলাভাষ্য ব্যবস্থাপনা, সেচের ক্ষমতা বাড়ানো, এবং জল সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
2. মাটি স্বাস্থ্য ও উর্বরতা: উচ্চ মাটি সমাগত, উর্বর মাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মাটি সংরক্ষণ, সুস্থ উর্বর মাটি উন্নত করতে মৌলিক পুষ্টিকর উর্বরতা উন্নত করতে পারে।
3. প্রয়োজনীয় পোষণ সরবরাহ: উচ্চ মানের পোষণ সহজেই অধিক উত্পাদনে সাহায্য করতে পারে। কৃষকদের জন্য সঠিক পোষণ পরামর্শ এবং সাপ্লাই করা প্রয়োজন।
4. প্রয়োজনীয় প্রয়োজনীয় প্রয়োজনীয় প্রয়োজন: কৃষকদের জন্য উচ্চ মানের বীজ, কীটনাশক, ও অন্যান্য কৃষি উপকরণ সরবরাহ করা গুরুত্বপূর্ণ।
5. কৃষি প্রযুক্তির উন্নতি: সম্প্রতি প্রযুক্তির উন্নতি হয়েছে এবং এটি কৃষি উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করতে পারে। ইংরেজি ভাষার খোলামেলা, সুস্থ বীজ, রোবটিক কৃষি প্রযুক্তি এবং সাথে সাথে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে উৎপাদন বাড়ানো যায়।
6. বাগ-বাগিচা বা মিশ্র চাষ: বিভিন্ন প্রকারের ফসল মিশ্র চাষ করতে কৃষকদের উৎসাহিত করা উচিত, যাতে তারা একই ভূমিতে একাধিক ফসল চাষ করতে পারে এবং উৎপাদন বাড়ানো যায়।
7. কৃষি ঋণ বিনিয়োগ এবং বীমা: কৃষকদের জন্য ঋণ এবং বীমা সুবিধা দেওয়া বৃদ্ধি করতে পারে এবং তাদের ঋণ পরিশোধ করার জন্য সুবিধা দেওয়া উচিত।

এই পদক্ষেপগুলি একসাথে আত্মসাত্ত্বক কৃষি উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করতে পারে এবং বাংলাদেশের কৃষি সমস্যার সামাধানে অবশ্যই মাধ্যম হতে পারে।

 
আমাদের জীবনে কৃষি 
বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। আমাদের জীবনে কৃষি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা কৃষি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের মৌলিক চাহিদাগুলো মেটানোর প্রায় সকল উপকরণ উৎপাদন ও সরবরাহ করে। এছাড়া অন্যান্য পণ্য ও সেবা ক্রয়ের অর্থও কৃষি যোগান দেয়। খাদ্য , বস্ত্র , বাসস্থান ও স্বাস্থ্য খাতের চাহিদাগুলো পূরণে আমাদের জীবনে কৃষি তাই ব্যাপক ভূমিকা রাখে। কৃষির অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলো যেমন : ফসল , পশু - পাখি , মৎস্য ও বনায়ন নিয়েই হচ্ছে কষির পরিধি।

কৃষির পরিধি ও পরিসর 

কৃষি একটি আদি , আধুনিক এবং অত্যন্ত সম্মানজনক পেশা। কারণ এর মাধ্যমেই মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলো মেটানো হয়। মানুষের মৌলিক চাহিদা বলতে খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ও শিক্ষাকে বুঝায়। তাই সংগত কারণে কৃষির পরিধি ব্যাপক। ফসল উৎপাদন , পশু - পালন, হাঁস-মুরগি পালন, মৎস্য চাষ ও বনায়ন কৃষির অন্তর্ভুক্ত বিষয়। 

কৃষি আমাদের খাদ্য যোগান দেয়। ধান, গম, আলু, ভুট্টা, শাকসবজি, ফল - ফলাদি এসব খাদ্য ও পুষ্টি আমরা কৃষি থেকে পাই। পাট, তুলা ও রেশম থেকে কাপড় তৈরির সুতা পাই  কাঠ, বাঁশ, খড়, শন, গোলপাতা ইত্যাদি থেকে গৃহনির্মাণ সামগ্রী ও আসবাবপত্র পাই। বাঁশ, খড়, গবাদি পশুর গোবর, গাছের ডাল ইত্যাদি জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করি। কাঠ ও আখের ছোবড়া, বাঁশ ইত্যাদি থেকে কাগজ পাই। আমলকী, হরতকি, বহেরা, থানকুনি, বাসক ইত্যাদি থেকে ঔষধ পাওয়া যায়। দূধ, মাংস, ডিম এবং পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার আমরা পেয়ে থাকি পশু - পাখি পালন করে। আর এসবই হলো কৃষি। খাদ্য উৎপাদন এবং বস্ত্র, বাসস্থানের উপাদান সরবরাহ করে থাকেন কৃষক। কৃষিভিত্তিক বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়ন কৃষিনির্ভর। তাই কৃষির উন্নয়ন হলে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়ন হবে। 

আমাদের এই মৌলিক চাহিদাগুলো মেটানো হয় বিভিন্ন ফসল উৎপাদন , পশু - পাখি প্রতিপালন , মৎস্য চাষ ও বনায়নের মাধ্যমে।

বিভিন্ন ফসল বলতে মাঠ ফসল: দানা, তেল, আঁশ, পানীয় , ডাল ও উদ্যান জাতীয় ফসলকে বুঝায়। পশু-পাখি প্রতিপালন বলতে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে গবাদিপশু, হাঁস-মুরগি পালন এবং পশু খাদ্য উৎপাদনকে বুঝায়। মৎস্য চাষ বলতে বদ্ধ ও মুক্ত জলাশয়ে বিভিন্ন পদ্ধতিতে বিভিন্ন জাতের মাছের চাষকে বুঝায় আর বনায়ন বলতে প্রাকৃতিক বনায়ন, সামাজিক বনায়ন এবং কৃষি বনায়নকে বুঝায়।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url