সপ্তম শ্রেণি, কৃষি শিক্ষা, দ্বিতীয় অধ্যায় (কৃষি প্রযুক্তি) || Class Seven, Agricultural Education, Chapter 2
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন:
১। কর্তন বা ছেদ কলম কী?
উত্তর: শাখা, মূল, পাতা ইত্যাদি মাতৃগাছ হতে বিচ্ছিন্ন করে উপযুক্ত মাধ্যম ও পরিবেশে রেখে চারা উৎপাদন করাকে কর্তন বা ছেদ বলে। গোলাপ, লেবু ইত্যাদি ফুল ও ফলগাছের চারা উৎপাদনে এ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।
২। ডিম উৎপাদনের উদ্দেশ্য কী?
উত্তর: সাধারণত দুটি উদ্দেশ্যে ডিম উৎপাদন করা হয়ে থাকে। এগুলো হলো-
১. হাঁস - মুরগির বংশ বৃদ্ধির জন্য।
২. মানুষের পুষ্টির জন্য অর্থাৎ খাবার জন্য।
২. মানুষের পুষ্টির জন্য অর্থাৎ খাবার জন্য।
৩। পুকুরের পানি কেন শোধন করা হয়?
উত্তর: পুকুরের পানি দূষিত হলে অক্সিজেনের অভাব ঘটে ও পানিতে বিষক্রিয়া দেখা দেয়। রোগ জীবাণুরও প্রাদুর্ভাব ঘটে। ফলে মাছ মারা যায়, মাছ চাষি আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়, সাথে সাথে পরিবেশও দূষিত হয়। এজন্য মাছকে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন সরবরাহের উদ্দেশ্যে এবং বিষক্রিয়া ও অন্যান্য রোগজীবাণুর হাত থেকে বাঁচানোর জন্য পুকুরের পানি শোধন করা দরকার।
৪। সেটিং ট্রেতে কিভাবে ডিম বসানো হয়?
উত্তর: সেটিং ট্রেতে ডিম বসানোর জন্য সাধারণত ৫৫-৬০ গ্রাম ওজনের ডিম বেছে নিতে হয়। ডিমগুলোর মোটা অংশ উপরের দিকে এবং সরু অংশ নিচের দিকে করে বসানো হয়। লক্ষ রাখতে হয় যেন, ইনকিউবেশন চলাকালীন সময়ে ডিমগুলো ৪৫ ডিগ্রি কৌণিক অবস্থানে থাকে।
অনুধাবন মূলক প্রশ্ন:
১। বাংলাদেশের প্রধান সেচ প্রকল্পগুলো কী কী?
উত্তর: বাংলাদেশ সরকার কৃষকদের কৃষি কাজের সুবিধার জন্য অনেকগুলো সেচ প্রকল্প গ্রহণ করেছেন। প্রকল্পগুলো পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত। সেচ প্রকল্পের আওতাধীন এলাকাগুলোতে সারা বছর ধরে শস্য উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে। নিচে প্রকল্পগুলোর নাম দেওয়া হলো-
উত্তর: বাংলাদেশ সরকার কৃষকদের কৃষি কাজের সুবিধার জন্য অনেকগুলো সেচ প্রকল্প গ্রহণ করেছেন। প্রকল্পগুলো পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত। সেচ প্রকল্পের আওতাধীন এলাকাগুলোতে সারা বছর ধরে শস্য উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে। নিচে প্রকল্পগুলোর নাম দেওয়া হলো-
১. গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্প (জি.কে.প্রজেক্ট),
২. বরিশাল সেচ প্রকল্প (বি.আই.পি),
৩ . ভোলা সেচ প্রকল্প,
৪ . ঠাকুরগাঁও গভীর নলকূপ সেচ প্রকল্প,
৫. চাঁদপুর সেচ প্রকল্প (সি.আই.পি),
৬. মুহুরী সেচ প্রকল্প (এম.আই.পি),
৭. পাবনা আইআরডি,
৮ . মেঘনা - ধনাগোদা সেচ প্রকল্প,
৯. কর্ণফুলি সেচ প্রকল্প (কে.আই.পি)
২. বরিশাল সেচ প্রকল্প (বি.আই.পি),
৩ . ভোলা সেচ প্রকল্প,
৪ . ঠাকুরগাঁও গভীর নলকূপ সেচ প্রকল্প,
৫. চাঁদপুর সেচ প্রকল্প (সি.আই.পি),
৬. মুহুরী সেচ প্রকল্প (এম.আই.পি),
৭. পাবনা আইআরডি,
৮ . মেঘনা - ধনাগোদা সেচ প্রকল্প,
৯. কর্ণফুলি সেচ প্রকল্প (কে.আই.পি)
২। পানি নিকাশ বলতে কী বোঝ? পানি নিকাশের উদ্দেশ্যসহ অতিরিক্ত পানির ক্ষতিকর দিকগুলো বর্ণনা কর।
উত্তর: ফসলের জমি থেকে জমে থাকা অতিরিক্ত পানি অপসারণ করাকেই পানি নিকাশ বলা হয়।
পানি নিকাশের উদ্দেশ্য: পানি নিকাশের উদ্দেশ্য হলো-
১. মাটিতে বায়ু চলাচল বাড়ানো,
২ . গাছের মূলকে কার্যকরি করা,
৩. উপকারি অণুজীবের কার্যক্রম বৃদ্ধি করা,
৪. মাটির তাপমাত্রা সহনশীল মাত্রায় আনা,
৫. মাটিতে 'জো' আনা।
অতিরিক্ত পানির ক্ষতিকর কাজ: অতিরিক্ত পানি ফসলের ক্ষেতে জমে থাকলে কী কী ক্ষতি হয় নিচে তা উল্লেখ করা হলো-
১. মাটিতে ফসলের শিকড় এলাকায় বায়ু চলাচলের বিঘ্ন ঘটে।
২. পানি জমে থাকার ফলে মাটির ফাঁক বন্ধ হয়ে যায় । ফলে গাছ মরে যায়।
৩. পানি জমে থাকলে শিকড় এলাকায় অক্সিজেনের অভাব ঘটে। এর ফলে অনেক রোগ দেখা যায়।
8. গাছের শিকড় এলাকায় পানি জমলে শিকড় বিস্তার লাভ করতে পারে না। ফলে গাছের বৃদ্ধি ব্যাহত হয় কিংবা গাছ মরে যায়।
৫. উপকারি অণুজীবের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। অন্যদিকে রোগ সৃষ্টিকারি অণুজীবের সংখ্যা ও সংক্রমণ বাড়ে।
৬. পুষ্টির গ্রহণযোগ্যতা কম হয়।
৩। বীজ কয় ধাপে উৎপন্ন করা হয়? বিভিন্ন প্রকার বীজের বর্ণনা দাও।
উত্তর: মানসম্মত বীজ তিন ধাপে উৎপাদন করা হয় । এগুলো হলো-
১. মৌল বীজ,
২. ভিত্তি বীজ,
৩. প্রত্যায়িত বীজ।
নিচে বিভিন্ন প্রকার বীজের বর্ণনা দেওয়া হলো-
১. মৌল বীজ: সকল বংশগত গুণাগুণ রক্ষা করে যে বীজ উৎপাদন করা হয় তাকে মৌল বীজ বলে। উদ্ভিদ প্রজনন বিজ্ঞানিরা পরীক্ষা করার পর যখন কোনো ফসলের জাতকে খুব ভালো মনে করেন তখন সে বীজকে মৌল বীজ বলে। মৌল বীজ সাধারণত পরিমাণে কম উৎপাদন করা হয়। এ বীজ বিক্রিযোগ্য নয়।
২. ভিত্তি বীজ: মৌল বীজের সকল বংশগত গুণাগুণ রক্ষা করে বীজ অনুমোদন সংস্থার নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে বেশি পরিমাণ উৎপাদিত বীজকে ভিত্তি বীজ বলে। ভিত্তি বীজও কৃষকের নিকট বিক্রি করা হয় না।
৩. প্রত্যায়িত বীজ: ভিত্তি বীজ হতে বীজ অনুমোদন সংস্থার নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে বীজ উৎপাদনের নিয়ম কানুন মেনে যে বীজ উৎপাদন করা হয় এবং মাঠে ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া হয় তাকে প্রত্যয়িত বীজ বলে। এই বীজ কৃষকদের ব্যবহারের জন্য অনুমোদন সংস্থা অনুমোদন প্রদান করে। প্রত্যয়িত বীজ কৃষকদের নিকট বিক্রি করা হয়।
৪। ডিম বাছাইয়ের ধাপসমূহ উল্লেখপূর্বক প্রাকৃতিক উপায়ে ডিম ফোটানোর পদ্ধতি বর্ণনা কর।
উত্তর: ডিম বাছাইয়ের ধাপগুলো হলো-
১. মাঝারি আকারের মসৃণ মোটা ও শক্ত খোসার ডিম,
২. স্বাভাবিক রঙের ডিম,
৩. মাঝারি আকারের ডিম,
৪. পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ডিম,
৫. ৫০-৬০ গ্রাম ওজনের ডিম,
৬. ডিমের বয়স গ্রীষ্মকালে ৩-৪ দিন এবং শীতকালে ৭-১০ দিন।
উক্ত ধাপগুলো অনুসরণ করেই ডিম বাছাই করতে হবে। প্রাকৃতিক উপায়ে ডিম ফোটানোর পদ্ধতি:
মুরগির নিজের দেহের তাপ দিয়ে নিষিক্ত ডিম ফোটানোর পদ্ধতিই হলো ডিম ফোটানোর প্রাকৃতিক পদ্ধতি। এক্ষেত্রে দেশি মুরগি কিছুদিন ডিম পাড়ার পর কুচে হয় এবং ডিমে তা দিতে আগ্রহী হয়। এরূপ মুরগিকে ১০-১২টি ডিম দিয়ে বসানো হয়। প্রথমত মুরগির জন্য ঝুড়িতে খড়কুটা দিয়ে একটি বাসা বানাতে হয়। বাসাটি ঘরের নির্জন কোণে রাখতে হয়। মুরগির বাসাটি ৩০ সেমি . ব্যাস এবং ১০ সেমি গভীর হবে। ডিমে বসানোর পূর্বে মুরগিকে ভালোভাবে খাওয়াতে হবে। মুরগির সামনে দানাদার খাবার ও পানি রাখতে হবে। ৮-১০ দিন পর ডিমগুলো সূর্যের আলোয় পরীক্ষা করতে হবে। ডিমের ভিতর ভূণ থাকলে কালো দাগের মতো দেখাবে। ২১ তম দিনে ডিম থেকে বাচ্চা বেরিয়ে আসবে। প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে ফোটা বাচ্চারা প্রায় দুই মাস মায়ের তত্ত্বাবধানে থাকে।
৫। কীভাবে সেচের পানির অপচয় হয়ে থাকে? সেচের পানির কার্যকারিতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন কেন?
উত্তর: সেচের পানি সাধারণত তিনভাবে অপচয় হয়ে থাকে। এগুলো হলো-
১. বাষ্পীভবন,
২. পানির অনুস্রাবণ,
৩. পানি চুয়ানো
সেচের পানির কার্যকারিতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা:
জমিতে সেচ না দিয়ে ফসল উৎপাদন সম্ভব নয়। সময়মতো ও সঠিক পরিমাণ পানি না পেলে ফলন ভালো হয় না। সেচের পানি বিভিন্নভাবে অপচয় হওয়ার ফলে আশানুরূপ ফলন পাওয়া যায় না। জমিতে প্রয়োজনীয় পানি থাকলে গাছ মাটি থেকে পুষ্টি উপাদানগুলো সহজেই গ্রহণ করতে পারে। তাই ফলন বৃদ্ধির জন্য সেচের পানির অপচয় রোধের মাধ্যমে সেচের পানির কার্যকারিতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।