সপ্তম শ্রেণি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, দ্বিতীয় অধ্যায় (কম্পিউটার সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতি) || Class Seven, ICT, Chapter 2 (Computer related equipment)
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন:
১। কী-বোর্ড কী? কী-বোর্ডের বর্ণনা দাও।
উত্তর: কম্পিউটারে ইনপুট দেওয়ার প্রধান বহুল ব্যবহৃত যন্ত্র হলো কী-বোর্ড। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অধিকাংশ যন্ত্রে সাধারণত কী বোর্ডের মাধ্যমে ইনপুট দেওয়া হয়। এ সকল যন্ত্রকে দিয়ে কোনো কাজ করাতে চাইলে যন্ত্রগুলোকে কিছু নির্দেশনা দিতে হয়। কী-বোর্ডের বোতাম চেপে এ নির্দেশগুলো যন্ত্রের মধ্যে প্রবেশ করানো হয়। আজকের দিনের আধুনিক কম্পিউটার কী বোর্ডের ধারণা এসেছে টাইপরাইটার নামের এক ধরনের যন্ত্র থেকে কীবোর্ডে সাধারণত বর্ণ, সংখ্যা বা বিশেষ কিছু চিহ্ন সারিবদ্ধভাবে বিন্যস্ত থাকে। কম্পিউটারের কীবোর্ড টাইপ রাইটারের কীবোর্ডের মতো হলেও বিশেষ কাজের জন্য কিছু অতিরিক্ত কী থাকে। কীবোর্ড সাধারণত ইংরেজি ভাষায় হলেও অন্যান্য ভাষার কীবোর্ডও পাওয়া যায়।
২। ডিজিটাল ক্যামেরা সম্পর্কে বুঝিয়ে বলো।
উত্তর: আমাদের খুবই পরিচিত একটি যন্ত্র হচ্ছে ক্যামেরা। এ সময়ে খুব জনপ্রিয় হলো ডিজিটাল ক্যামেরা। ডিজিটাল ক্যামেরার প্রচলন অনেক আগে থেকে শুরু হলেও কম্পিউারের ইনপুট যন্ত্র হিসেবে এর ব্যবহার শুরু হয়েছে অনেক পরে। প্রথম দিকে গবেষণার কাজে বিশেষ করে মহাকাশ গবেষণায় ডিজিটাল ক্যামেরা কম্পিউটারের ইনপুট যন্ত্র হিসেবে ব্যবহার শুরু হয়। বর্তমানে প্রায় সকল প্রকার ডিজিটাল ক্যামেরাই কম্পিউটারের ইনপুট যন্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা যায়। ডিজিটাল ক্যামেরায় ইউএসবি ব্যবহার করা যায়। ডিজিটাল ক্যামেরাকে ইউএসবি পোর্টের মাধ্যমে কম্পিউটারের সাথে যুক্ত করে ডিজিটাল ছবি কম্পিউটারে প্রবেশ করানো হয়।
৩। OMR কী? এর কাজ লিখ।
উত্তর: ওএমআর এর পূর্ণরূপ হলো অপটিক্যাল মার্ক রিডার। এটি একটি ইনপুট ডিভাইস। আলোর প্রতিফলন বিচার করে এটি বিভিন্ন ধরনের তথ্য বুঝতে পারে। ওএমআরের কাজের ধরন অনেকটা স্ক্যানারের মতো। বিশেষভাবে তৈরি করা কিছু দাগ বা চিহ্ন ওএমআর পড়তে পারে। বর্তমানে এটি অনেকের কাছেই খুব পরিচিত। বিশেষ করে বহুনির্বাচনি প্রশ্নের উত্তরপত্র যাচাইয়ে এটির ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। সঠিক উত্তরের বৃত্তটির অবস্থান কম্পিউটারকে আগে থেকেই জানিয়ে রাখা হয়। শিক্ষার্থীরা সঠিক বৃত্ত ভরাট করলে নম্বর পেয়ে যায়। অন্যথায় নম্বর পাওয়া যায় না। সঠিকটিসহ একের অধিক বৃত্ত ভরাট করলেও নম্বর পাওয়া যায় না। এর মাধ্যমে কম সময়ে অনেক উত্তরপত্র মূল্যায়ন করা যায়। এছাড়া মূল্যায়নে ভুল বা পক্ষপাতিত্ব হওয়ার কোনো সম্ভাবনাই নেই। তাই এটি অত্যন্ত জনপ্রিয়।
৪। রমের বর্ণনা দাও।
উত্তর: রম বা রিড অনলি মেমোরি মাদারবোর্ডের সাথে সংযুক্ত থাকে। আইসিটি যন্ত্রপাতি বা কম্পিউটারের হার্ডওয়ার সচল রাখার জন্য কিছু নির্দেশনা প্রয়োজন হয়। এ নির্দেশনাগুলো ছাড়া কম্পিউটার চালু করা যায় না। তাই রম এ নির্দেশনাগুলো স্থায়ীভাবে সংরক্ষিত থাকে। বিদ্যুৎ থাকা না থাকার উপর এই মেমোরি নির্ভর করে না । ব্যবহারকারীও বিশেষ ব্যবস্থা ছাড়া এটি মুছে ফেলতে পারে না। এ মেমরি শুধু পাঠ করা যায় বলে একে রম বা রিড অনলি মেমোরি বলে। যেহেতু বিশেষ ব্যবস্থা ছাড়া এ মেমোরি মোছা বা নতুন তথ্য সংযোজন করা যায় না তাই একে স্থায়ী মেমরি বলে।
৫। মাদারবোর্ডের বর্ণনা দাও।
উত্তর: কম্পিউটারের এ মাদারবোর্ড- মেইন বোর্ড, সিস্টেম বোর্ড এবং স্টিভ জবসের অ্যাপেল কম্পিউটারের ক্ষেত্রে লজিক বোর্ড নামেও পরিচিত। মাদারবোর্ড হচ্ছে কম্পিউটারের প্রসেসরের সাথে অন্যান্য ইনপুট, মেমোরি, আউটপুট বা স্টোরেজ ডিভাইসসহ সকল যন্ত্রপাতির সংযোগ রক্ষার বোর্ড। একসময় মাদারবোর্ডে প্রসেসর বা সিপিইউ সকেট ছাড়াও ভিডিও কার্ড, সাউন্ড কার্ড, র্যাম ইত্যাদি লাগানোর স্লট বা সকেট অবশ্যই দেখা যেতো। বর্তমানে মাদারবোর্ডে র্যাম ছাড়া অন্যান্য কার্ড স্থায়ীভাবে সংযোজিত অবস্থায় থাকে। এতে করে কম্পিউটারের নির্মাণ ব্যয় অনেক কমে গেছে। তাছাড়া প্রসেসরের ক্ষমতা বৃদ্ধির কারণে অনেক যন্ত্রাংশের কাজ প্রসেসর নিজেই করে থাকে। মাদারবোর্ডের অত্যাবশ্যকীয় অংশ হচ্ছে সহায়ক চিপসেট যা সিপিইউ এর সাথে অন্যান্য যন্ত্রপাতির কার্যক্রম সমন্বয় করে থাকে।
৬। সিডি / ডিভিডির জনপ্রিয়তার কারণগুলো লিখ।
উত্তর: সিডি / ডিভিডির বৈশিষ্ট্য বা জনপ্রিয়তার কারণ:
১. তথ্য ধারণ ক্ষমতা অধিক ।
২. সহজে বহন করা যায়।ল
৩. স্থায়িত্ব বেশি।
৪. তুলনামূলক মূল্য অনেক বেশি ।
৫. ব্যবহার অনেক সহজ।
২. সহজে বহন করা যায়।ল
৩. স্থায়িত্ব বেশি।
৪. তুলনামূলক মূল্য অনেক বেশি ।
৫. ব্যবহার অনেক সহজ।
৭। পেন ড্রাইভ বা ফ্ল্যাশ ড্রাইভ কী?
উত্তর: কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের কম্পিউটারের অনেক তথ্য এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে নিতে হয়। সেটা সবচেয়ে সহজে করা যায় নেটওয়ার্কিং ব্যবহার করে। যেখানে নেটওয়ার্ক নেই সেখানে তথ্য নিতে হলে কোনো এক ধরনের স্টোরেজ ডিভাইস ব্যবহার করতে হয়। যে স্টোরেজ ডিভাইসটি সবচেয়ে সহজে বহন করা যায় সেটার পেনড্রাইভ বা ফ্ল্যাশ ড্রাইভ। এটা পেন বা কলমের মতো ছোট এবং পকেটে করে নেওয়া যায়। ২০০০ সালের দিকে যখন এগুলো বাজারে আসে তখন ৩২ মেগাবাইট তথ্য ধারণ করতে পারতো। এখন ৩২ গিগাবাইটের পেনড্রাইভ সহজেই পাওয়া যায়। মূল্যও আগের তুলনায় কম। তাই ব্যবহারকারীদের কাছে এর জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে। বিভিন্ন ধরনের সুন্দর ডিজাইনের পেনড্রাইভ বাজারে পাওয়া যায়।
৮। মেমোরি কার্ড কী? এর কাজ লিখ।
উত্তর: তথ্য সংরক্ষণের জন্য এক ধরনের মাইক্রোচিপ সংযুক্ত কার্ড ব্যবহার করা হয়। এগুলোর নাম মেমোরি কার্ড। মেমোরি কার্ডেও অনেক তথ্য সংরক্ষণ করা যায়। তবে এটি সরাসরি সংযোগ দেওয়া যায় না। এর জন্য নির্ধারিত স্লট প্রয়োজন হয় অথবা কার্ড রিডার ব্যবহার করতে হয়। মেমোরি কার্ড নানা আকৃতি ও বিভিন্ন ক্ষমতার হতে পারে। এমপিথ্রি বা এমপিফোর প্লেয়ার এবং গেমস খেলার যন্ত্রগুলো ছাড়াও সকল ধরনের ডিজিটাল ক্যামেরা, মোবাইল ফোন বা স্মার্টফোনে এগুলোর ব্যাপক ব্যবহার লক্ষ করা যায়।
৯। প্রসেসর ও সিপিইউ কী?
উত্তর: কম্পিউটার, মোবাইল ফোন বা এ ধরনের আইসিটি ডিভাইসগুলোর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো প্রসেসর। একে সিপিইউ বা কেন্দ্রীয় প্রক্রিয়াকরণ অংশও বলা হয়। এখনকার দিনে গাড়ি, ক্যামেরা, মোবাইল ফোন, গেম কনসোল, টেলিভিশনসহ সব ধরনের হাইটেক যন্ত্রপাতিই প্রসেসর নিয়ন্ত্রিত। সবচেয়ে আধুনিক প্রযুক্তি হলো এ প্রসেসর। অসংখ্য ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট (আইসি) দিয়ে প্রসেসর তৈরি হয়। আইসিগুলো তৈরি হয় ট্রানজিস্টার দিয়ে। এগুলো সব একটি ক্ষুদ্র চিপ এর মধ্যে থাকে। প্রসেসরে আইসির সংখ্যা পূর্বের তুলনায় অনেক বাড়লেও চিপ এর আকার ক্রমান্বয়ে ছোট হয়ে আসছে। আকার ছোট হলেও এর কাজ করার ক্ষমতা বেড়েই চলেছে।
১০। মেশিন ভাষা কী?
উত্তর: কম্পিউটার তথা প্রসেসর আসলে কারও ভাষাই বোঝে না। সে তার নিজের ভাষাই শুধু বোঝে। কম্পিউটারের ভাষায় কেবলমাত্র দুটো অক্ষর '০' এবং '১' । '০' মানে হচ্ছে ০ থেকে ২ ডোন্ট বিদ্যুৎ আর '১' মানে হচ্ছে ৩ থেকে ৫ ভোল্ট বিদ্যুৎ। এ ভাষার নাম মেশিন ভাষা।
১১। প্লটার কী? এর কাজ লিখ।
উত্তর: প্লুটার একটি আউটপুট যন্ত্র। আর্কিটেকচারাল নকশা, মানচিত্র বা গ্রাফের নিখুঁত ও অনেক বড় কাগজে প্রিন্ট করার ক্ষেত্রে এটি ব্যবহৃত হয়।
১২। মাদারবোর্ডর নামকরণের স্বার্থকতা আলোচনা কর।
উত্তর: একটি কম্পিউটার খুললে সাধারণত একটি বোর্ড দেখা যায় যেখানে অসংখ্য ইলেকট্রনিক্স খুঁটিনাটি লাগানো থাকে। এ বোর্ডটির নাম মাদারবোর্ড। মাদারবোর্ড হচ্ছে কম্পিউটারের প্রসেসরের সাথে অন্যান্য ইনপুট, মেমোরি, আউটপুট বা স্টোরেজ ডিভাইসসহ সকল যন্ত্রপাতির সংযোগ রক্ষার বোর্ড। মাদারবোর্ডের অত্যাবশ্যকীয় অংশ হচ্ছে সহায়ক চিপসেট যা সিপিইউ -এর সাথে অন্যান্য যন্ত্রপাতির কার্যক্রম সমন্বয় করে থাকে। তাই মাদারবোর্ড কম্পিউটারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। মা যেভাবে সবাইকে বুকে আগলে রাখে এ বোর্ডটিও কম্পিউটারের সবকিছু সেভাবে বুকে আগলে রাখে। তাই এর নাম দেওয়া হয়েছে মাদারবোর্ড।
১৩। প্রসেসর কী? প্রসেসর এর গুরুত্ব আলোচনা কর।
উত্তর: প্রসেসর বা সিপিইউ হলো একটি কম্পিউটারের মধ্যে থাকা হার্ডওয়্যার যা একটি প্রোগ্রাম চালাতে ব্যবহৃত হয়। প্রসেসরের গুরুত্ব: কম্পিউটার, মোবাইল ফোন বা এ ধরনের আইসিটি ডিভাইসগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো প্রসেসর। একে সিপিইউ (CPU - Central Processing Unit) বা কেন্দ্রীয় প্রক্রিয়াকরণ অংশও বলা হয় । অসংখ্য ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট (IC) দিয়ে প্রসেসর তৈরি হয়। আইসিগুলো তৈরি হয় ট্রানজিস্টার দিয়ে।
এগুলো সব একটি ক্ষুদ্র চিপ (Chip) এর মধ্যে থাকে। প্রসেসরে আইসির সংখ্যা পূর্বের তুলনায় অনেক বাড়লেও চিপ-এর আকার ক্রমান্বয়ে ছোট হয়ে আসছে। আকার ছোট হলেও এর কাজ করার ক্ষমতা বেড়েই চলেছে। কম্পিউটারের সামগ্রিক প্রক্রিয়াকরণের কাজ সিপিইউ-এর মাধ্যমেই হয়ে থাকে। সফটওয়্যারের নির্দেশ বোঝা এবং সে অনুযায়ী তথ্য প্রক্রিয়া করা এর কাজ। অর্থাৎ ইনপুট ও আউটপুট ডিভাইসের মাধ্যমে তথ্য আদান - প্রদানের কাজটি সিপিইউ বা প্রসেসর নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। এক কথায় কম্পিউটার সংশ্লিষ্ট সকল যন্ত্রপাতি ও সফটওয়্যারের নির্দেশনার মধ্যে সমন্বয় করে কাজ সমাধান করে প্রসেসর। তাই প্রসেসরের গুরুত্ব অনেক বেশি।
১৪। মাইক্রোফোন কী ধরনের ডিভাইস? বর্ণনা কর।
উত্তর: মাইক্রোফোন এক ধরনের ইনপুট ডিভাইস এ ডিভাইস ব্যবহার করে আমরা কথা, গান বা যেকোনো ধরনের শব্দ কম্পিউটারে প্রবেশ করাতে পারি। বিশেষ করে অনলাইনভিত্তিক ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের ক্ষেত্রে কথা বলার জন্য এটি ব্যবহৃত হয়। টেলিফোন মাধ্যমে এটি ব্যবহৃত হয় বলে এ ডিভাইসটির আবিষ্কার অনেক আগেই হয়েছে। বর্তমানে এটি কম্পিউটার ও স্মার্টফোনে ইনপুট ডিভাইস হিসাবে ব্যবহার হয়। কথা বলা ছাড়াও ভয়েস রিকগনিশনের ক্ষেত্রে মাইক্রোফোন ব্যবহার হয়ে থাকে।
১৫৷ কম্পিউটারের মাউস সম্পর্কে বুঝিয়ে বলো।
উত্তর: মাউস একটি জনপ্রিয় ইনপুট ডিভাইস। একে অনেকে পয়েন্টিং ডিভাইসও বলে থাকে। যারা প্রথম এটি তৈরি করেছে তাদের ধারণা ছিল এটি দেখতে ইঁদুরের মতো, তাই এর নাম দেওয়া হয়েছে মাউস। মাউসে সাধারণত দুটি বাটন ও একটি স্কুল চক (হুইল) থাকে। কম্পিউটারে ইনপুট দিতে এ বাটনগুলো বিভিন্নভাবে ব্যবহৃত হয়। বর্তমান পৃথিবীতে অনেক ধরনের মাউস প্রচলিত আছে। সাধারণ ব্যবহারকারীগণ স্ট্যান্ডার্ড মাউস ব্যবহার করে।
কম্পিউটারের মনিটরের পর্দায় মাউসের অবস্থান দেখানো হয় তীরের ফলার মতো একটি পয়েন্টারের মাধ্যমে। মাউসটি নড়াচড়া করা হলে পয়েন্টারটি অবস্থান পরিবর্তন করে। মাউসের বাটন ক্লিক করে কম্পিউটারকে বিভিন্ন নির্দেশ প্রদান করা হয়। চিত্রভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেমে মাউসের বহুল ব্যবহার লক্ষ করা যায়। সাধারণত নির্দিষ্ট প্রোগ্রামের চিহ্নের (আইকনের) উপর মাউসের বামদিকের বাটন একবার ক্লিক করলে প্রোগ্রামটি নির্বাচিত (সিলেক্ট) হয় এবং পরপর দ্রুত দুবার ক্লিক করলে প্রোগ্রামটি চালু হয়। ল্যাপটপ কম্পিউটারের টাচপ্যাড দিয়ে মাউসের কাজ সম্পাদন করা যায়।
১৬। ওয়েব ক্যাম কী? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: ওয়েব ক্যাম বা ওয়েব ক্যামেরা ডিজিটাল ক্যামেরাই একটি বিশেষ রূপ। এটি হার্ডওয়্যার হিসেবে কম্পিউটারের সাথে যুক্ত থাকে। সাধারণত ল্যাপটপ কম্পিউটারে ওয়েব ক্যামেরা সংযুক্ত থাকে। ওয়েব ক্যামেরার মাধ্যমে স্থির চিত্র বা ভিডিও চিত্র কম্পিউটারে ইনপুট হিসেবে প্রবেশ করানো যায়। ওয়েব ক্যামেরা ব্যবহার করে নেটওয়ার্কের মাধ্যমে কম্পিউটার ব্যবহারকারীরা নিজেদের মধ্যে সরাসরি ছবি বা ভিডিও আদান প্রদান করতে সামাজিক ওয়েব সাইটগুলোতে পারস্পরিক আলাপচারিতায় ওয়েব ক্যাম ব্যবহৃত হয়। ভিডিও কনফারেন্স বা ভিডিও ফোনে ওয়েব ক্যামেরার ব্যবহার সর্বাধিক।
ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবে এ ক্যামেরার ব্যাপক ব্যবহারের কারণেই এর নাম হয়েছে ওয়েব ক্যাম। ওয়েব ক্যাম বর্তমানে নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কাজেও ব্যবহার করা হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা থেকে শুরু করে বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, বাসা-বাড়িতে নিরাপত্তার প্রয়োজনে এ ক্যামেরা ব্যবহার করা হয। এ ক্যামেরার সাথে সরাসরি কম্পিউটারের সংযোগ থাকে। ফলে এ ক্যামেরা সার্বক্ষণিক ভিডিও চিত্র কম্পিউটারে প্রেরণ করে এবং তা কম্পিউটারে সংরক্ষণ করে রাখে।
১৭। স্ক্যানার কী? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: স্ক্যানার হচ্ছে ছবি, লেখা বা ডকুমেন্ট বা কোনো বস্তুর ডিজিটাল প্রতিলিপি কম্পিউটারে দেওয়ার জন্য একটি ইনপুট ডিভাইস। আগে ফটোকপি মেশিনের সাহায্যে বিভিন্ন ডকুমেন্টের প্রতিলিপি করা হতো। কিন্তু প্রতিলিপি যতবার দরকার ততবারই মেশিন ব্যবহার করে প্রতিলিপি করতে হতো এবং তথ্যটি সংরক্ষিত করা যেত না। স্ক্যানার এ সমস্যাটির সমাধান দিয়েছে। স্ক্যানার ব্যবহার করে ছবি, ডকুমেন্ট বা কোনো বস্তুর ডিজিটাল প্রতিলিপি তৈরি করে কম্পিউটারে ফাইল আকারে সংরক্ষণ করা যায়। প্রয়োজনে এ ডিজিটাল প্রতিলিপি পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করে যে কোনো সময়ে ব্যবহার করা যায়।
১৮। র্যাম (RAM) কে অস্থায়ী মেমোরি বলা হয় কেন?
উত্তর: কম্পিউটার বা স্মার্ট ফোনের মাদারবোর্ডের সাথে র্যাম সংযুক্ত থাকে। প্রসেসর প্রাথমিকভাবে র্যামে প্রয়োজনী তথ্য জমা করে। প্রসেসর র্যাম থেকে তথ্য নিয়ে তথ্য প্রক্রিয়াজাত করে। প্রসেসর র্যামের যে কোনো জায়গা থেকে সরাসরি তথ্য সংগ্রহ করে বলে একে Random Access Memory বা সংক্ষেপে RAM বলা হয়। এখনকার দিনে প্রসেসরের ক্ষমতা যেমন বেড়েছে তেমনি সফটওয়্যারগুলো অনেক কার্যকর এবং জটিল হয়েছে। তাই এগুলোকে মেমোরির অনেক বড় অংশ ব্যবহার করতে হয়।
সেজন্য এখনকার কম্পিউটারগুলোর জন্য কমপক্ষে ২ গিগাবাইট বা তার চেয়ে বেশি মেমোরি দরকার হয়। প্রসেসরের গতির সাথে পাল্লা দিয়ে র্যামের গতিও এখন অনেক। র্যামে তথ্য থাকা না থাকা বিদ্যুৎ প্রবাহের উপর নির্ভরশীল। বিদ্যুৎপ্রবাহ বন্ধ করে দিলে এর সমস্ত তথ্য মুছে যায়। অর্থাৎ কম্পিউটার চালু করলেই র্যাম প্রয়োজনীয় তথ্য সংরক্ষণ করতে থাকে। আবার কম্পিউটার বন্ধ করলে র্যাম তথ্য-শূন্য হয়ে যায়। এজন্য র্যাম (RAM) কে অস্থায়ী মেমোরি বলা হয়।
১৯। মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর সম্পর্কে ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর হলো একটি ইলেকট্রো অপটিক্যাল যন্ত্র। এর সাহায্যে কম্পিউটার বা অন্য কোনো ভিডিও উৎস থেকে নেওয়া ডাটা ইমেজে রূপান্তর করা যায়। এ ইমেজ লেন্স পদ্ধতির মাধ্যমে বহুগুণে বিবর্ধিত করে দূরবর্তী দেয়ালে বা স্ক্রিনে ফেলে উজ্জ্বল ইমেজ তৈরি করে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর। আধুনিক প্রজেক্টরগুলো ত্রিমাত্রিক ইমেজও তৈরি করতে সক্ষম। মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর সাধারণত প্রেজেন্টেশনের কাজে ব্যবহার করা হয়। এগুলো স্লাইড প্রজেক্টর এবং ওভারহেড প্রজেক্টরের আধুনিক রূপ। এটি ডিজিটাল ইমেজকে যে কোনো সমতল যেমন— দেয়াল বা ডেস্কের উপর বড় করে ফেলতে সক্ষম। বিশাল সভাকক্ষে ব্যবহারের জন্য এর ঔজ্জ্বল্য এক হাজার থেকে চার হাজার লুমেন্সের হতে হয়।
এটি ল্যাম্পের ক্ষমতার উপর নির্ভর করে। এলসিডি প্রজেক্টরগুলোর ল্যাম্প সাধারণত চার হাজার ঘণ্টা ব্যবহারের পর পরিবর্তন করতে হয়। আরেক ধরনের প্রজেক্টর রয়েছে যা এলইডি প্রযুক্তির ব্যবহার করে। এগুলোর ল্যাম্প বিশ হাজার ঘণ্টা কাজ করতে পারে। এগুলোর মূল এলসিডি বা এলইডি প্রজেক্টর আকারে ছোট বলে খুব সহজেই বহনযোগ্য। বর্তমানে পকেটে প্রজেক্টর পাওয়া যায় যা কম্পিউটার, ট্যাবলেট পিসি বা মোবাইল ফোন থেকে ব্যবহারের সুবিধা দেয়।