সপ্তম শ্রেণি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, চতুর্থ অধ্যায় (ওয়ার্ড প্রসেসিং) || Class Seven, ICT, Chapter 4

 সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন: 
১। ওয়ার্ড প্রসেসিং কী ? 
উত্তর: ‘Word' অর্থ ‘শব্দ’ আর ‘Processing' অর্থ 'প্রক্রিয়াকরণ' করা। অর্থাৎ কম্পিউটার দিয়ে লেখালেখির কাজ অর্থাৎ কীবোর্ডের মাধ্যমে শব্দ টাইপ করে সম্পাদনা ও অন্যান্য কাজ করে প্রয়োজনানুযায়ী সুসজ্জিত করে কাগজে ছাপানোর প্রক্রিয়াকে ওয়ার্ড প্রসেসিং বলে। বর্তমানে কম্পিউটার প্রযুক্তি ব্যবহার করে অনেক দক্ষতার সাথে ওয়ার্ড প্রসেসিং এর কাজ করা হয়।

২। উচ্চারণভিত্তিক বাংলা টাইপের কৌশল লিখ। 
উত্তর: উচ্চারণভিত্তিক (ফোনেটিক) বাংলা টাইপিং ব্যবস্থায় যদি “ami banglay gan gai" টাইপ করা হয় তবে লেখা হবে আমি বাংলায় গান গাই। এছাড়া এতে যুক্ত করা হয় মাউস দিয়ে বাংলা লেখার সুবিধা। ফলে কম্পিউটারে বাংলার ব্যবহারে যাদের ভীতি ছিল তারা সহজেই বাংলা ব্যবহার করতে শুরু করে।

৩। বাংলায় ওয়ার্ড প্রসেসর চালু করার নিয়ম লিখ। 
উত্তর:
প্রথমে যে কোনো একটি ওয়ার্ড প্রসেসর প্রোগ্রাম চালু করতে হবে। এরপর বাংলায় টাইপ করার জন্য ওয়ার্ড প্রসেসরকে প্রস্তুত করতে হবে। বাংলায় লেখালেখি করার জন্য প্রথম ওয়ার্ড প্রসেসরে বিজয় সফটওয়্যারে Alt Ctrl B একসাথে চাপতে হবে এবং অভ্র সফটওয়ারে F12 কী চাপতে হবে। পরবর্তী কাজ হল ফন্ট নির্বাচন করা। বিজয় সফটওয়্যারে SutonnyMJ এবং অভ্র সফটওয়্যারে NikoshBAN ফন্ট নির্বাচন করতে হবে। তাহলেই ওয়ার্ড প্রসেসরে বাংলা লেখালেখি করার জন্য প্রস্তুত।

৪। কোনো ডকুমেন্ট কাট , কপি ও পেস্ট করার নিয়ম লিখ।
উত্তর: কোনো ডকুমেন্ট কাট করার নিয়ম: অনেক সময় ডকুমেন্টের কোনো অক্ষর, শব্দ, বাক্য বা কোনো অংশকে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সরাতে হয়। এজন্য প্রথমে ঐ অক্ষর , শব্দ , বাক্য বা অংশকে নির্বাচন করে কী বোডের কন্ট্রোল এবং এক্স কী এক সাথে চাপতে হয়। 

কোনো ডকুমেন্ট কপি করার নিয়ম: অনেক সময় ডকুমেন্টের কোনো অক্ষর, শব্দ, বাক্য বা কোনো অংশের অনুলিপি বা কপি করে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিতে হয় । এজন্য প্রথমে ঐ অক্ষর, শব্দ, বাক্য বা অংশকে নির্বাচন করে কী বোর্ডের কন্ট্রোল সি কী একসাথে চাপতে হয় । 

কোনো ডকুমেন্ট পেস্ট করার নিয়ম: পেস্ট শব্দের আক্ষরিক অর্থ হল আঠা লাগানো। কাট ও কপি করার পরের কাজ হল নির্বাচিত অক্ষর, শব্দ, বাক্য বা অংশকে নির্ধারিত স্থানে পেস্ট করা। এজন্য কাট বা কপি কমাণ্ড ব্যবহার করার পর কার্সরকে নির্ধারিত স্থানে নিয়ে কন্ট্রোল এবং ভি কী একসাথে চাপতে হবে।

৫। ডকুমেন্ট ফরম্যাটিং এর বর্ণনা দাও।
উত্তর : ডকুমেন্ট তৈরি করা, সম্পাদনা করা এবং সাজানোর কাজকে ডকুমেন্ট ফরম্যাটিং বলে। ডকুমেন্টের যে অংশের অক্ষর বা লেখার আকার পরিবর্তন করতে হলে প্রথমে তা নির্বাচন করতে হবে। তারপর যে কোনো ওয়ার্ড প্রসেসরে টুলবার বা রিবনে ফন্টের নামের পাশে যে সংখ্যাটি থাকে তা পরিবর্তন করতে হবে। আকার বড় করতে হলে সংখ্যাটি বাড়াতে হবে এবং ছোট করতে হলে সংখ্যাটি কমাতে হবে।

৬। কীভাবে ডকুমেন্ট প্রিন্ট করা যায় ? 
উত্তর: ফরম্যাটকৃত ডকুমেন্টকে কাগজে ছাপানোকে প্রিন্ট বলা হয়। প্রিন্ট করতে হলে প্রথমে কম্পিউটারের সাথে যথাযথভাবে একটি প্রিন্টার সংযুক্ত করতে হবে। প্রিন্টার চালনা করার জন্য প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার এবং উপযুক্ত সাইজের কাগজ আছে কি-না দেখে নিতে হবে। এবার যে ডকুমেন্টটি প্রিন্ট করতে হবে সেই ডকুমেন্টটি ওপেন করে মাউস দিয়ে প্রিন্টার আইকনে ক্লিক করতে হবে। অথবা, কী-বোর্ডের সাহায্যে CTRL P কী দুটি একসাথে চাপতে হবে। এরপর (এন্টার) কী চাপলে প্রিন্টের কাজ শুরু হবে। এভাবে প্রিন্টারের সাহায্যে ডকুমেন্ট প্রিন্ট করা যায়। 

৭। কাট, কপি, পেস্ট, ডিলিট, সেভ করার নিয়ম বর্ণনা কর।
উত্তর: কাট: অনেক সময় ডকুমেন্টের কোনো অক্ষর, শব্দ, বাক্য বা কোনো অংশকে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সরাতে হয় । এজন্য প্রথমে ঐ অক্ষর, শব্দ, বাক্য বা অংশকে নির্বাচন করে কাটার জন্য কী -বোর্ডের Ctrl এবং x কী একসাথে চাপতে হয়।

কপি: অনেক সময় ডকুমেন্টের কোনো অক্ষর, শব্দ, বাক্য বা কোনো অংশের অনুলিপি বা কপি করে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিতে হয়। এজন্য প্রথমে ঐ অক্ষর, শব্দ, বাক্য বা অংশকে নির্বাচন করে কী-বোর্ডের Ctrl এবং C কী একসাথে চাপতে হয়। 

পেস্ট: পেস্ট শব্দের আক্ষরিক অর্থ হলো আঠা লাগানো। কাট কপি করার পরের কাজ হলো নির্বাচিত অক্ষর, শব্দ, বাক্য বা অংশকে নিধ, রিত স্থানে পেস্ট করা। এজন্য কাট বা কপি কমান্ড ব্যবহার করার পর কারসরকে নির্বাচিত স্থানে নিয়ে Crl এবং V কী একসাথে চাপতে হবে।

ডিলিট: ডকুমেন্টের কোনো অক্ষর, শব্দ, বাক্য বা কোনো অংশকে মুছে ফেলতে হলে কী-বোর্ডের Delete বা Del কী ব্যবহার করা হয়। যা মুছে ফেলতে চাই প্রথমে তা নির্বাচন করতে হবে। তারপর Delete বা Del বা BACKSPACE কী চাপলে নির্বাচিত অংশ মুছে যাবে। 

সেভ: কোন ডকুমেন্ট বা ফাইল সেভ করতে হলে ফাইল মেনু থেকে Save কমান্ড দিলে বা Ctrl + S চাপ দিলে Save as ডায়ালগ বক্স আসবে। Save as ডায়ালগ বক্সের ফাইল নেম ঘরে ফাইলের নাম টাইপ করে OK বাটনে ক্লিক করণে ডকুমেন্ট বা ফাইলটি সেভ হয়ে যাবে। 

৮। নিচের যুক্তাক্ষরগুলো লিখতে কীবোর্ডের কোন বোতাম চাপতে হবে ? ক্ষ , জ্ঞ , ঞ্চ, ষ্ণ
উত্তর : অক্ষরগুলো লিখতে কী - বোর্ডের যে বোতামগুলো চাপতে হবে তা নিচে দেওয়া হলো:  
ক্ষ = jgN; জ্ঞ = ugI, ষ্ণ = NgB, ঞ্চ = Igy

৯। ডকুমেন্টের এলাইনমেন্ট কয় ধরনের হতে পারে ও কী কী? এগুলোর কী - বোর্ড শর্টকাট লিখ।
উত্তর : ডকুমেন্টের এলাইনমেন্ট চার ধরনের হতে পারে। 
১. বাম দিক থেকে, 
 ২. ডানদিক থেকে, 
৩. মাঝ বরাবর,
৪. সবদিকে সমান বা জাস্টিফাইড ।

কী - বোর্ড শর্টকাট: যা করতে চাই:
১: বাম দিকে এলাইন: CTRL l
২. ডান দিকে এলাইন: CTRL r
৩. মাঝখানে এলাইন: CTRLe
৪. জাস্টিফাইড এলাইন: CTRLj

১০। বাংলা কী-বোর্ড এর উৎপত্তি বর্ণনা কর। 
উত্তর: কী বোর্ড হলো ওয়ার্ড প্রসেসরের প্রধান ইনপুট ডিভাইস। ওয়ার্ড প্রসেসিংয়ে বাংলায় লেখালেখি করতে হলে আমাদের বাংলা কী - বোর্ড সম্পর্কে ধারণা নিতে হবে। ইংরেজি কী বোর্ডের উপর ভিত্তি করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শহীদ বুদ্ধিজীবী মুনীর চৌধুরী ১৯৬৫ সালে সর্বপ্রথম বাংলা টাইপ রাইটারের জন্য একটি বিজ্ঞানসম্মত কী বোর্ড লে-আউট তৈরি করেন। পরবর্তী সময়ে এ কী বোর্ড লে-আউটই কম্পিউটারের জন্য করা হয়। কিন্তু প্রয়োজন হয় এমন একটি সফটওয়্যারের যা কম্পিউটারে বাংলা লিখতে সহায়তা করবে। 
এ পর্যায়ে ১৯৮৫ সালে কিছু বাংলা ফন্টসহ শহীদ লিপি সফটওয়্যারটি প্রবর্তিত হয়। কিন্তু এটি তেমন একটা জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারেনি। আশির দশকের মাঝামাঝি থেকে শুরু করে নব্বই দশকের শেষের দিক পর্যন্ত অনেকগুলো বাংলা লেখার সফটওয়্যার বাজারে আসে যার মধ্যে বিজয়, প্রশিকা শব্দ , প্রবর্তনা , লেখনী প্রভৃতি প্রথম সারিতে ছিল। সফটওয়্যার উন্নয়নের কারণে এবং বিভিন্ন সফটওয়্যারের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হওয়ায় বিজয় সফটওয়্যারটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। এ সময় বিভিন্ন কী বোর্ড লে - আউট প্রচলিত হলেও বিজয় কী বোর্ড লে - আউট সবচেয়ে এগিয়ে থাকে।

১১। ওয়ার্ড প্রসেসিংয়ে কীভাবে বাংলা লেখা প্রস্তুত করা যায়? বর্ণনা কর।
উত্তর: ওয়ার্ড প্রসেসিংয়ে বাংলা লেখার জন্য প্রথমে আমাদেরকে যে কোনো একটি ওয়ার্ড প্রসেসিং প্রোগ্রাম চালু করতে হবে। এরপর বাংলায় টাইপ করার জন্য প্রথমে আমাদের ওয়ার্ড প্রসেসরে বিজয় সফটওয়্যারে Ctrl Alt B একসাথে চাপতে হবে এবং অভ্র সফটওয়্যারে F12 কী চাপতে হবে। পরবর্তী কাজ হল ফন্ট নির্বাচন করা। বিজয় সফটওয়্যারে Sutonny MJ এবং অভ্র সফটওয়্যারে NikoshBAN ফন্ট নির্বাচন করতে হবে। এবার আমাদের কম্পিউটারের ওয়ার্ড প্রসেসর বাংলা লেখালেখি করার জন্য প্রস্তুত।

১২। ডকুমেন্ট ব্যবস্থাপনার কাজগুলো কীভাবে করতে হয়? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: ডকুমেন্ট ব্যবস্থাপনার কাজগুলো হলো-
 ১. মাই ডকুমেন্ট ফোল্ডার খুলে তার মধ্যে একটি নতুন ফোল্ডার খুলতে হবে। 
 ২. প্রাথমিকভাবে ফোল্ডারটির নাম নিউ ফোল্ডার লেখা থাকবে। এটিকে নিজের মতো করে নামকরণ করতে হবে । নিজের নাম অথবা তারিখ অনুযায়ী ফোল্ডারের নামকরণ করা যেতে পারে।
 ৩. তৈরি করা ডকুমেন্টটি সংরক্ষণের জন্য কম্পিউটারকে নির্দেশ দিলে যে ডায়লগ বক্স আসবে সেখানে ফোল্ডারটি মাউসের ডাবল ক্লিক করার মাধ্যমে খুলে তারপর সংরক্ষণ করতে হবে।
 ৪. ডকুমেন্ট সংরক্ষণের সময় কাজের ধরন অনুযায়ী ডকুমেন্টের নামকরণ করতে হবে । এতে ডকুমেন্টটি সহজেই খুঁজে বের করতে পারবে।
 
১৩। ডকুমেন্টে আকার বা লেখার আকার বোল্ড, ইটালিক ও আন্ডারলাইন ধরার নিয়ম লেখ।
উত্তর: ডকুমেন্টের যে অংশের অক্ষর বা লেখার আকার পরিবর্তন করতে হবে প্রথমে তা নির্বাচন করতে হবে। তারপর যে কোন ওয়ার্ড প্রসেসরের টুলবারে বা রিবনে ফন্টের নামের পাশে B, I, U থাকে তাতে মাউস ক্লিক করতে হবে। কী-বোর্ডের সাহায্যেও কাজটি সহজে করা যায়। যা করতে চাই:
১. লেখা বোল্ড করতে : CTRL b
২. লেখা ইটালিক করতে : CTRL i
৩. লেখা আন্ডারলাইন করতে: CTRL u
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url