সপ্তম শ্রেণি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, পঞ্চম অধ্যায় (শিক্ষায় ইন্টারনেটের ব্যবহার) || Class Seven, ICT, Chapter 5

 সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন:
১। ইন্টারনেট কী? ইন্টারনেটে তথ্য কয় ভাগে থাকতে পারে বর্ণনা কর।
উত্তর: ইন্টারনেট তথ্যের এক বিশাল ভাণ্ডার। দুনিয়ার এমন কোন বিষণ্ণ নেই যা সম্পর্কে ইন্টারনেটে কোন তথ্য নেই। শিক্ষা, ক্রীড়া, সংস্কৃতি, ধর্ম প্রায় সব বিষয়েই ইন্টারনেটে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে নানান তথ্য। শিক্ষা তথা শিক্ষা ব্যবস্থা, শিক্ষার ধরন এবং শিক্ষাক্রমের বিভিন্ন বিষয়ের তথ্য ইন্টারনেটে খুঁজলে পাওয়া যায়। ইন্টারনেটে এ সকল তথ্য সাধারণত কয়েকভাবে থাকতে পারে। একটি হলো লিখিত তথ্য। অর্থাৎ বিষয়টি সম্পর্কে লিখিত তথ্য। কোনোটি হয় সরাসরি তথ্য। যেমন নিউটনের গতির সূত্রাবলি। 

আবার কোনোটিতে থাকে এ সংক্রান্ত ব্যাখ্যা এবং উদাহরণ। আবার ইন্টারনেটে ইদানীং অনেক বিষয়বস্তু ভিডিও আকারে পাওয়া যায়। এটি হল কোনো ব্যক্তি কোনো একটি বিষয় ব্যাখ্যা করেন, সেটি ক্যামেরায় ধারণ করা হয় এবং তারপর সেটি ইউটিউবে http: //www.youtube.com এর মতো কোনো ভিডিও শেয়ারিং সাইটে আপলোড করা হয়। সেখান থেকে এ ভিডিওটি সবাই দেখতে পারে। আবার কোনো কোনো সাইটে রয়েছে শিক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন এনিমেশন বা কার্টুন চিত্র। এখানে পাঠ্যসূচির বিভিন্ন বিষয় , কার্টুন বা এনিমেশনের মাধ্যমে বোঝানো হয়ে থাকে।

২। সার্চ ইঞ্জিন কী? কয়েকটি সার্চ ইঞ্জিনের নাম লিখ। 
উত্তর:
অন্যান্য যে কোনো বিষয়ের মতো ইন্টারনেটে যে কোনো শিক্ষা সংক্রান্ত তথ্য জানার সহজ উপায় হল কোন একটি সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করা। সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করে যে কোনো তথ্য খুব সহজে বের করা যায়। কয়েকটি সার্চ ইঞ্জিনের নাম হল Yahoo, Google, Msn, Hotmail প্রভৃতি।

৩। ই-বুকের বর্ণনা দাও।
উত্তর: ই-বুক হল ইলেকট্রনিক বুক। অর্থাৎ ই-বুক মুদ্রিত বইয়ের ডিজিটাল সংস্করণ। ই - বুক এর ওয়েব সাইটের ঠিকানা http: //www.ebook.gov.bd । এটি বাংলাদেশের ই - বুকের সমাহার। এখানে রয়েছে বিভিন্ন শ্রেণির সকল পাঠ্যপুস্তকের ই - বুক সংস্করণ। এ বইগুলো কম্পিউটারের পর্দায় পড়া যায় , পাতা উল্টানো যায়, যে কোনো পাতায় যাওয়া যায়।

৪। উইকিপিডিয়া কী ? এর বর্ণনা দাও।
উত্তর: উইকিপিডিয়া হল সবচেয়ে বড় মুক্ত বিশ্বকোষ। এটি সারা বিশ্বের মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে তৈরি করেছেন এবং ক্রমাগত সমৃদ্ধ করে চলেছেন। প্রায় দুশ'রও বেশি ভাষায় এটি চালু রয়েছে। ইংরেজি ভাষায় উইকিপিডিয়াতে ৪০ লক্ষেরও বেশি নিবন্ধ রয়েছে যার অনেকগুলো সরাসরি শিক্ষা সংক্রান্ত। প্রত্যেক উইকিপিডিয়াতে অনুসন্ধান করার একটি বাক্স রয়েছে। সেখানে কাঙ্ক্ষিত শব্দ বা শব্দাবলি লিখলে এ সংক্রান্ত নিবন্ধ বা নিবন্ধাবলি দেখতে পাওয়া যায়। বাংলা ভাষায় উইকিপিডিয়া প্রায় ২৩ হাজারে বেশি নিবন্ধ আছে । সেখান থেকে কাঙ্ক্ষিত তথ্য পাওয়া যায়।

৫। ই-বুক বলতে কী বোঝ? বাংলাদেশের একটি ই-বুক সাইটের নাম লিখ।
উত্তর: ই-বুক হলো মুদ্রিত বইয়ের ইলেকট্রনিক রূপ। ইলেকট্রনিক মাধ্যমে প্রকশিত হয় বলে শব্দ, অডিও ও অ্যানিমেশন যুক্ত করা যায়। এ ধরনের বই কেবল কম্পিউটার , স্মার্টফোন বা বিশেষ ধরনের রিডারে পড়া যায়। একটি ই-বুকে কয়েক হাজার বই ধারণ করে রাখা যায়। শিক্ষার্থী যখন খুশি যেখানে খুশি এটি পড়তে পারে। বাংলাদেশে এই রকম একটি ই - বুক সাইটের নাম হলো : http://www.ebook.gov.bd.

৬ । শিক্ষা সংক্রান্ত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সাইটের নাম লিখ।
উত্তর : শিক্ষা সংক্রান্ত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সাইটের নাম নিচে দেওয়া হলো –
১. বাংলাদেশের ই - বুক সমাহার: http://www.ebook.gov.bd
২. বাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রণালয়ের সাইট : http://www.moedu.gov.bd
৩. উইকিপিডিয়া সাইট : http://en.wikipedia.org
৪. খান একাডেমির শিক্ষা সাইট : http://www.khanacademy.org
৫. গণিত বিষয়ক সাইট : http://www.mathforum.org/dr.math/Dr math

৭। খান একাডেমি কী? শিক্ষাক্ষেত্রে এর ভূমিকা বর্ণনা কর।
উত্তর: খান একাডেমি হচ্ছে বর্তমানে বিশ্বের জনপ্রিয় শিক্ষা সাইট, যেখানে বিভিন্ন বিষয়ের ব্যাখ্যা ভিডিওর মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শিক্ষাবিদ সালমান খান ২০০৬ সালে এ সাইটটি প্রতিষ্ঠা করেন। এ সাইটে শিক্ষণীয় বিভিন্ন বিষয়ে সালমান খানের ৩৪০০ টি ছোট ছোট ভিডিও আছে। এর মধ্যে গণিত, ইতিহাস, স্বাস্থ্যসেবা, পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান, অর্থনীতি, মহাকাশ বিজ্ঞান, কম্পিউটার বিজ্ঞান ইত্যাদি রয়েছে। 
বাংলা ভাষাতেও সালমান খানের ভিডিও পাওয়া যায়। বাংলা ভাষায় ভিডিও সংখ্যা ১২৫৮ টি। এখান থেকে বীজগণিত, পার্টিগণিত, পরিসংখ্যান, ত্রিকোণমিতি ইত্যাদির বাংলা ভাষায় ভিডিও দেখা এবং ডাউনলোড করা যায়। এভাবে খান একাডেমি শিক্ষাক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখছে।

৮। ভর্তি পরীক্ষায় ইন্টারনেটের ভূমিকা আলোচনা করো।
উত্তর: বর্তমানে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি কার্যক্রম ইন্টারনেটের মাধ্যমে করা হয়। ইন্টারনেট ব্যবহার করে ঘরে বসেই ভর্তি পরীক্ষার জন্য রেজিস্ট্রেশন করা যায়। রেজিস্ট্রেশন করার পর ইন্টারনেট থেকেই প্রবেশপত্র প্রিন্ট সংগ্রহ করা যায়।
ফলে শুধুমাত্র নির্দিষ্ট পরীক্ষার দিন প্রবেশপত্র নিয়ে পরীক্ষা দিলেই হয়। বার বার ভর্তিচ্ছুক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দৌড়াদৌড়ি করতে হয় না। পরীক্ষার ফলাফলও ইন্টারনেটে সহজে পাওয়া যায় । শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার আগে সেই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে ঘরে বসেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে জানা যায়। ইন্টারনেট ব্যবহার করে পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তের প্রতিষ্ঠানে সহজেই ভর্তি হওয়া যায়। এ জন্য ভর্তি পরীক্ষায় ইন্টারনেটের ভূমিকা অপরিসীম।

৯। শিক্ষাক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ভূমিকা বর্ণনা কর।
উত্তর: শিক্ষাক্ষেত্রে ইন্টারনেট বহুল ব্যবহার করা হয়। ছাত্রছাত্রীরা ইন্টারনেট ব্যবহার করে যে কোন বিষয়ে পরিষ্কার তথ্য পেয়ে থাকে। নিজের অর্জিত জ্ঞানকে অনলাইন পরীক্ষার মাধ্যমে যাচাই করা যায়। ইন্টারনেট থেকে বিভিন্ন প্রফেসর ও শিক্ষকের লেকচার নোট নিয়ে শিক্ষার মান উন্নয়ন করা যায়। ঘরে বসে ইন্টারনেট ব্যবহার করে কোনো বিষয়ে অনলাইন কোর্স সম্পন্ন করা যায়। পাঠ্যপুস্তক ও অন্যান্য বই ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করে সহজেই পড়া যায়। বর্তমানে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা ইন্টারনেটের মাধ্যমে সম্পন্ন করা যায়। 

এছাড়াও ইন্টারনেটে শিক্ষা বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য খুঁজে পেতে বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইট তৈরি হয়েছে যেমন- শিক্ষা বিষয়ক যেকোনো ওয়েবসাইট থেকে একজন শিক্ষার্থী গণিত , পরিবেশ বিজ্ঞান , কম্পিউটার কৌশল ইত্যাদির বিভিন্ন কোর্স করতে পারে। এভাবে শিক্ষাক্ষেত্রে ইন্টারনেট অনন্য ভূমিকা রাখছে।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url