অষ্টম শ্রেণি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সাজেশন, প্রথম অধ্যায় (তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্ব) || Class Eight, ICT Suggestion, Chapter 1

 প্রথম অধ্যায়: তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্ব
১. ইন্ট্রানেট কী? সরকারি কর্মকাণ্ডে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উল্লেখযোগ্য পাঁচটি ক্ষেত্রের ব্যাখ্যা দাও।
উত্তর: ইন্ট্রানেট: কোনো ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন দপ্তরগুলোর মধ্যকার নিজস্ব যোগাযোগ রক্ষার গ্রহণযোগ্য মাধ্যমকে বলা হয় ইন্ট্রানেট সরকারি কর্মকাণ্ডে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উল্লেখযোগ্য চারটি ক্ষেত্রের ব্যাখ্যা নিচে দেওয়া হলো:
ই - পর্চা: জমি-জমার বিভিন্ন রেকর্ড সংগ্রহের পূর্বে অনেক হয়রানি হতো, বর্তমানে দেশের ৬৪ টি জেলায় ই-সেবা কেন্দ্র থেকে তা সহজে সংগ্রহ করা যায়। এজন্য অনলাইনে আবেদন করে আবেদনকারী জমি-জমা সংক্রান্ত বিভিন্ন দলিল এর সত্যায়িত অনুলিপি সংগ্রহ করতে পারে। এর ফলে জনগণ খুব সহজে সেবা পাচ্ছেন। অন্যদিকে সেবা প্রদানের সময় তথ্যাদি ডিজিটালকৃত হয়ে যাচ্ছে ফলে ভবিষ্যতে তথ্য প্রাপ্তির পথ সহজ হচ্ছে।
ই - বুক: সকল পাঠ্যপুস্তক অনলাইনে সহজে প্রাপ্তির জন্য সরকারিভাবে একটি ই-বুক প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হয়েছে। (www.ebook.gov.bd)। এতে বিভিন্ন শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক ও সহায়ক পুস্তক রয়েছে।
ই - পূর্জি: চিনিকলের পুর্জি (ইক্ষু সরবরাহের অনুমতিপত্র) স্বয়ংক্রিয়করণ করা হয়েছে এবং বর্তমান মোবাইল ফোনে কৃষকরা তাদের পুজিঁ পাচ্ছে। ফলে এ সংক্রান্ত হয়রানির অবসান হওয়ার পাশাপাশি কৃষকও তাদের ইক্ষু সরবরাহ উন্নত করতে পেরেছেন।
পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ: বর্তমানে দেশের সকল পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল অনলাইনে এবং মোবাইল ফোনের মাধ্যমে প্রকাশ করা হচ্ছে।
ই-স্বাস্থ্যসেবা: জনগণের কাছে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য দেশের অনেক স্থানে টেলিমেডিসিন সেবা কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। এ ছাড়া সরকারি হাসপাতালসমূহের ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে মোবাইল ফোনে বা এসএমএস অভিযোগ পাঠানোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর ফলে স্বাস্থ্যখাতে ইতিবাচক পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছে।
অষ্টম শ্রেণি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সাজেশন, প্রথম অধ্যায়

২. EPOS কী? উদাহরণসহ একমুখী ও দ্বিমুখী যোগাযোগের বর্ণনা দাও।
অথবা, যোগাযোগ করার পদ্ধতিকে কয় ভাগে ভাগ করা যায় বর্ণনা কর।
উত্তর: EPOS: BPOS হলো এমন একটি ব্যবস্থা যার মাধ্যমে বিক্রয়ের সকল তথ্য সংরক্ষণ করা যায় । এতে সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ের সুযোগ থাকে । নিচে উদাহরণসহ একমুখী ও দ্বিমুখী যোগাযোগের বর্ণনা দেওয়া হলো:

একমুখী যোগাযোগ: একমুখী পদ্ধতিতে যোগাযোগ হয় এক পক্ষ থেকে। যখন একজন বা একটি প্রতিষ্ঠান 'একমুখী' পদ্ধতিতে অনেকের সাথে যোগাযোগ করে, সেটিকে ইংরেজিতে বলে ব্রডকাস্ট বা একমুখী পদ্ধতি।
উদাহরণ: রেডিও বা টেলিভিশন হলো একমুখী পদ্ধতির সবচেয়ে বড় উদাহরণ। এ প্রক্রিয়ায় যখন কোনো অনুষ্ঠান প্রচার করা হয় তখন তা সবার জন্য প্রচার করা হয় এটি Broadcast পদ্ধতি। আর এক্ষেত্রে যাদের জন্য অনুষ্ঠান প্রচার করা হয় তারা পাল্টা যোগাযোগ করতে পারে না । তাই এটি একমুখী পদ্ধতি।

দ্বিমুখী যোগাযোগ: দ্বিমুখী পদ্ধতিতে যোগাযোগ হয় দুই পক্ষ থেকে এটি হলো একমুখী ব্রডকাস্ট পদ্ধতির সম্পূরক রূপ। এক্ষেত্রে দুই পক্ষেই যোগাযোগ করার সুযোগ তৈরি হয়।
উদাহরণ: এ প্রক্রিয়ার সবচেয়ে ভালো উদাহরণ হলো টেলিফোন, মোবাইল । কেননা এ সবের মাধ্যমে দু'জন একই সাথে পরস্পরের সাথে যোগাযোগ করতে পারে। এটি সম্ভব হয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অভূতপূর্ব উন্নয়নের জন্য।

৩. বাংলাদেশে মোবাইল ফোনের বিস্তার নতুন কর্মসৃজনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে- ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: বাংলাদেশে মোবাইল ফোনের বিস্তার নতুন কর্মসৃজনের দিগন্ত উন্মোচন করেছে। যেমন-
ক. মোবাইল কোম্পানিতে কাজের সুযোগ : মোবাইল ফোনের বিস্তারের ফলে দেশের সকল মোবাইল অপারেটর কোম্পানিতে কাজের পরিধিও অনেক বেড়েছে । ফলে প্রতিটি অপারেটর কোম্পানিতে বিপুল সংখ্যক কর্মসংস্থান হয়েছে।
খ. মোবাইল ফোনসেট বিক্রয় , বিপণন ও রক্ষণাবেক্ষণ: দেশের প্রায় ১২ কোটি মোবাইল গ্রাহকবে মোবাইল ফোনসেট সরবরাহ, সেগুলোর বিপণন , বিক্রয় এবং পরবর্তীকালে বিক্রয়োত্তর সেবার জন্য বিপুল পরিমাণ কর্মীর চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে।
গ. মোবাইল সেবা প্রদান: মোবাইল ফোনে বিল পরিশোধের জন্য দেশে প্রতিনিয়ত বিল পরিশোধ কেন্দ্র বৃদ্ধি পাচ্ছে । এছাড়া মোবাইলে নতুন নতুন সুবিধা যুক্ত হওয়ায় সৃষ্টি হচ্ছে অঞ্চলভিত্তিক সেবাকেন্দ্র। এর ফলেও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ঘ. নতুন খাতের সৃষ্টি: মোবাইলে প্রযুক্তি বিস্তারের ফলে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মতো অসংখ্য নতুন খাতের সৃষ্টি হয়েছে , যার মাধ্যমে অনেক নতুন কর্ম প্রত্যাশীর কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে।

৪. গবেষণা ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: তথ্য প্রযুক্তির কারণে গবেষণার জগতে শুধু যে বিশাল উন্নতি হয়েছে তা নয় বলা যেতে পারে এখানে সম্পূর্ণ নতুন একটা মাত্রা যোগ হয়েছে। মানুষ এখন সাহিত্য, শিল্প, সমাজবিজ্ঞান, গণিত অথবা প্রযুক্তি আর বিজ্ঞান, যা নিয়েই গবেষণা করুক না কেন তারা কম্পিউটার এবং তথ্য প্রযুক্তি ছাড়া এই গবেষণার কথা চিন্তাও করতে পারে না। বর্তমানে বৈজ্ঞানিক সকল কর্মকান্ড কম্পিউটারের উপর নির্ভরশীল। আগে বৈজ্ঞানিক কাজের জন্য মানুষকে দৈহিক পরিশ্রম করতে হতো, কম্পিউটার চলে আসার পর এগুলো আর নিজের হাতে করতে হয় না। কম্পিউটার ব্যবহার করে সকল কার্যক্রম করা যায়। তাই গবেষণা ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্ব অনেক বেশি।

৫. আউটসোর্সিং কী? কর্মসৃষ্টি ও কর্ম প্রান্তিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ভূমিকা ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: আউটসোর্সিং: আউটসোর্সিং হচ্ছে কোনো প্রতিষ্ঠানের কাজ নিজেরা না করে তৃতীয় কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সাহায্যে করিয়ে নেওয়া। ইন্টারনেটের বিকাশের ফলে বর্তমানে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর জন্য ঘরে বসে অন্য দেশের কাজ করে দেওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির বিপুল বিকাশের ফলে সমাজের বিভিন্ন স্তরে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন সূচিত হয়েছে। এর বিকাশের শুরুর দিকে ধারণা করা হতো স্বয়ংক্রিয়করণ এবং প্রযুক্তির প্রয়োগের ফলে বিশ্বব্যাপী কাজের পরিমাণ কমে যাবে এবং বেকারের সংখ্যা বেড়ে যাবে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে দেখা গেছে, তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশের ফলে কিছু কিছু সনাতনী কাজ বিলুপ্ত হয়েছে বা বেশ কিছু কাজের ধারা পরিবর্তন হলেও অসংখ্য নতুন কাজের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। 

শুধু কর্মসৃষ্টি নয়, কর্মপ্রত্যাশীদের কাজের সুযোগ প্রাপ্তিতেও ইন্টারনেট ও তথ্যপ্রযুক্তির বড় ভূমিকা রয়েছে। পূর্বে যেকোনো ধরনের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নোটিস বোর্ড, বড় বড় সরকারি প্রতিষ্ঠানের দেয়ালে সেঁটে দেওয়া হতো। আইসিটি ও ইন্টারনেটের বিকাশের ফলে বর্তমানে ইন্টারনেটে 'জবসাইট' নামে নতুন একধরনের সেবা চালু হয়েছে। এই সকল জনসাইটে নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান সরাসরি তাদের বিজ্ঞপ্তি প্রচার করতে পারে। এছাড়া এরূপ কোনো কোনো সাইটে কর্মপ্রত্যাশীগণ নিজেদের নিবন্ধিত করে রাখতে পারে।

৬. তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে একজন কর্মী কিভাবে দক্ষ হয়ে ওঠে? বর্ণনা কর।
উত্তর: তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির বিপুল বিকাশের ফলে সমাজের বিভিন্ন স্তরে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন সূচিত হয়েছে। এর বিকাশের শুরুর দিকে ধারণা করা হতো স্বয়ংক্রিয়করণ এবং প্রযুক্তির প্রয়োগের ফলে বিশ্বব্যাপী কাজের পরিমাণ কমে যাবে এবং নেকারের সংখ্যা বেড়ে যাবে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে দেখা গেছে, তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশের ফলে কিছু কিছু সনাতনী কাজ বিলুপ্ত হয়েছে বা বেশ কিছু কাজের ধারা পরিবর্তন হয়েছে বটে, তবে অসংখ্য নতুন কাজের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তথ্য প্রযুক্তির বিকাশের ফলে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে টিকে থাকার জন্য কর্মীরা নিজেদের ক্রমাগত দক্ষ করে নিচ্ছে। নিত্য নতুন প্রযুক্তির সহায়তায় কর্মীরা নিজের কাজকে আরও দক্ষতার সাথে সম্পাদন করছে। প্রযুক্তির মাধ্যমে কর্মীদেরকে তার কাছে আরও বেশি দক্ষ করে তোলা হচ্ছে।

অধ্যাপক ড. ইকবাল কাদির-এর মতে, প্রযুক্তিতে জনগণের সংযুক্তি বাড়লে তাদের উৎপাদনশীলতা বাড়ে। ফলে তৈরি হয় নতুন নতুন কর্মোদ্যোগ। ফলাফল নতুন কাজের সুযোগ। উপরের বর্ণনার আলোকে বলা যায়, তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে একজন কর্মী অনেক বেশি দক্ষ হয়ে ওঠে। ফলে অনেক প্রতিষ্ঠানই কম কর্মী দিয়ে বেশি কাজ করিয়ে নিতে পারে।

৭. ব্যবসা ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্ব বর্ণনা কর।
উত্তর: ব্যবসায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্ব নিচে উল্লেখ করা হলো:
১. কম সময়ে অধিক পরিমাণ কাজ করা যায়। এতে ব্যবসার খরচ কমে।
২. মজুদ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। বিশেষায়িত সফটওয়্যার কৌশল ব্যবহারের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় মজুদের হালনাগাদ তথ্য জানা যায় ফলে সেই অনুযায়ী উৎপাদনের ব্যবস্থা করা যায়।
৩. উৎপাদন স্বয়ংক্রিয়করণসহ আইসিটি নিয়ন্ত্রিত বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হলে কম সময়ে অধিক উৎপাদন করা যায়।
৪. কর্মী ব্যবস্থাপনায় তথ্যপ্রযুক্তির প্রয়োগ উৎপাদনে গতিশীলতা আনতে সক্ষম হয়।
৫. ই - মেইল ব্যবস্থার মাধ্যমে ব্যবসাক্ষেত্রে দ্রুত যোগাযোগ করা সম্ভব হয়।
৬. ইন্টারনেটের মাধ্যমে পণ্যের খবর বিভিন্ন ওয়েবসাইটে, সামাজিক যোগাযোগ সাইটে ছড়িয়ে দেওয়া যায়। এতে পণ্যের প্রচারে সহায়তা পাওয়া যায়।
৭. মোবাইল ফোনের মাধ্যমে মৌখিক যোগাযোগ, ভিডিও কনফারেন্সিং সুবিধা পাওয়া যায়।

৮. তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারে গবেষণা কাজ সহজতর হয়েছে ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: তথ্য প্রযুক্তির কারণে গবেষণার জগতে শুধু যে বিশাল উন্নতি হয়েছে তা নয় বলা যেতে পারে এখানে সম্পূর্ণ নতুন একটা মাত্রা যোগ হয়েছে। মানুষ এখন সাহিত্য, শিল্প, সমাজবিজ্ঞান, গণিত অথবা প্রযুক্তি আর বিজ্ঞান, যা নিয়েই গবেষণা করুক না কেন তারা কম্পিউটার এবং তথ্য প্রযুক্তি ছাড়া এই গবেষণার কথা চিন্তাও করতে পারে না। বর্তমানে বৈজ্ঞানিক সকল কর্মকাণ্ডে কম্পিউটারের উপর নির্ভরশীল । আগে বৈজ্ঞানিক কাজের জন্য মানুষকে দৈহিক পরিশ্রম করতে হতো, কম্পিউটার চলে আসার পর এগুলো আর নিজের হাতে করতে হয় না। 

কম্পিউটার ব্যবহার করে সকল কার্যক্রম করা যায়। জটিল গাণিতিক হিসাব - নিকাশে, অণু -পরমাণুর গঠন প্রকৃতি নির্ণয়ে, ঔষধের মান নিয়ন্ত্রণে, মহাকাশযান ডিজাইন, পাঠানোর পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন কম্পিউটার দ্বারা দ্রুত সমাধান করা যায়। তাই বলা যায় যে, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারে গবেষণার কাজ সহজতর হয়েছে।

৯. “তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির কারণে অসংখ্য কাজের সৃষ্টি হয়েছে” - উক্তিটি বিশ্লেষণ কর।
উত্তর: বর্তমানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সমৃদ্ধ বিশ্বে কর্মসৃজন ও কর্মপ্রাপ্তি এক নতুন মাত্রা পেয়েছে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির বিপুল বিকাশের ফলে সমাজের বিভিন্ন স্তরে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তনের গুরুত্বপূর্ণ একটি হলো নতুন কাজের সুযোগ সৃষ্টি । তথ্য প্রযুক্তির বিকাশের ফলে কিছু কিছু সনাতনী কাজ বিলুপ্ত হয়েছে বা বেশ কিছু কাজের ধারা পরিবর্তিত হয়েছে বটে, তবে অসংখ্য নতুন কাজের ধারা পরিবর্তিত হয়েছে বটে, তবে অসংখ্য নতুন কাজের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি এক হাজার ইন্টারনেট সংযোগের ফলে নতুন ৮০ টি কাজের সৃষ্টি হয়েছে। মানুষ এখন ঘরে বসেও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির কল্যাণে আয় করতে পারছে। সুতরাং বলা যায়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির কারণে অসংখ্য কাজের সৃষ্টি হয়েছে।

১০. "প্রযুক্তিতে জনগণের সংযুক্তি বাড়লে তাদের উৎপাদনশীলতা বাড়ে" - ব্যাখ্যা কর।
অথবা, সংযুক্তিই উৎপাদনশীলতা - উদ্ভিটি ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: তথ্য এবং প্রযুক্তির বিকাশের ফলে সমাজের বিভিন্ন স্তরে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন এসেছে। মানুষ সবক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার প্রয়োজনেই শিখে নিচ্ছে। প্রযুক্তির বিকাশের শুরুর দিকে ধারণা করা হতো স্বয়ংক্রিয়করণ এবং প্রযুক্তির প্রয়োগের ফলে বিশ্বব্যাপী কাজের পরিমাণ কমে যাবে এবং বেকারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু বিকাশের এ ধারায় দেখা গেছে কিছু কিছু সনাতনী কাজ বিলুপ্ত হয়েছে, বেশ কিছু কাজের ধারার পরিবর্তন এসেছে। তবে অসংখ্য নতুন কাজের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এক গবেষণায় জানা গেছে, প্রতি এক হাজার ইন্টারনেট সংযোগের ফলে নতুন ৮০ টি কাজের সুযোগ সৃষ্টি হয়। তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারের কারণে একজন কর্মী অনেক বেশি দক্ষ হয়ে ওঠে। 

বিপজ্জনক অনেক কাজ শ্রমিকরা যন্ত্র দিয়ে করায় বিভিন্ন কারখানায় নানারকম কাজের জন্য রোবট বা স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র ব্যবহার করা হয়। এসব যন্ত্র নিয়ন্ত্রণ মানুষই করে থাকে। এতে সময় বাঁচে কাজ নিখুঁতভাবে এবং সঠিকভাবে সম্পন্ন হয় এতে উৎপাদনশীলতা বাড়ে এর কারণ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সংযুক্তি। তথ্য এবং যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রয়োগে উৎপাদনশীলতায় এ বৃদ্ধিকে বাঙালি শিক্ষাবিদ এবং বর্তমানে আমেরিকার MIT এর অধ্যাপক ডঃ ইকবাল কাদির সংজ্ঞায়িত করেছেন এভাবে যে, সংযুক্তিই উৎপাদনশীলতা (Connectivity is productivity)। অর্থাৎ প্রযুক্তিতে জনগণের সংযুক্তি বাড়লে তাদের উৎপাদনশীলতা বাড়ে।

১১. চিকিৎসা ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অবদান বর্ণনা কর।
অথবা, চিকিৎসা বিজ্ঞানে আইসিটির গুরুত্ব বর্ণনা কর।
উত্তর: বিজ্ঞানের যে কয়টি শাখা দ্রুত উন্নতি করেছে চিকিৎসাবিজ্ঞান তার মধ্যে অন্যতম। তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে বিশ্বের যেকোনো স্থানে বসেই এখন চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করা সম্ভব। তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে ডাক্তাররা আর অনুমানের উপর নির্ভর করে না। একজন রোগী সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পূর্বে শরীরকে সূক্ষ্মভাবে পরীক্ষা করা এবং রোগ নির্ণয় জরুরি। আর এ কাজটি করা যায় প্রযুক্তির সাহায্যে। শুধু তাই নয় প্রাপ্ত তথ্যসমূহ ভবিষ্যতে প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য ডেটাবেসে সংরক্ষণ করা যেতে পারে । যখন কোনো ঔষধের প্রেসক্রিপশন করতে হয় সেটাও তথ্যপ্রযুক্তির কারণে সঠিক হয়। চিকিৎসার প্রয়োজনে নতুন নতুন যন্ত্রপাতিও তৈরি হচ্ছে। দেশের কোটি কোটি শিশুকে টিকা দেওয়ার কর্মসূচি সম্ভব হয় তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারে নিখুঁত পরিকল্পনা আর তা কার্যকরের মাধ্যমে। তথ্যপ্রযুক্তির কারণে অন্য মাত্রায় গবেষণা সম্ভব হয়েছে। 

পূর্বে শুধু রোগের উপসর্গ কমানো হতো এখন সত্যিকারভাবে রোগের কারণটিই খুঁজে বের করে সেটিকে অপসারণ করা হবে। শুধু তাই নয়, এখন যে রকম সব মানুষ একই ওষুধ খায় ভবিষ্যতে প্রত্যেকটা মানুষের জন্য আলাদা করে তার শরীরের উপযোগী ওষুধ তৈরি হবে  এমনকি ভবিষ্যতে হাজার মাইল দূরে থেকে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে সার্জনরা রোগীর অপারেশন করতে পারবেন। তাই বলা যায়, চিকিৎসাক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অবদান অপরিসীম।

১২. “দোরগোড়ায় সরকারি সেবা" বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর: জনগণের কাছে নাগরিক সেবা পৌঁছে দেওয়ার সেবাকে বলা হয় দোর গোড়ায় সরকারি সেবা । সরকারি কর্মকাণ্ডে আইসিটির সবচেয়ে উদ্ভাবনী ও কুশলী প্রয়োগ হলো জনগণের কাজে নাগরিক সেবা পৌঁছে দেওয়া । মোবাইল ফোন, রেডিও, টেলিভিশন এবং ইন্টারনেটের মাধ্যমে নাগরিক সেবাসমূহ সরাসরি নাগরিকের দোরগোড়ায় এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে তার হাতের মুঠোয় পৌঁছে দেওয়া যায়। উন্নত দেশগুলোতে এর মাধ্যমে জনগণ ঘরে বসেই পাসপোর্ট প্রাপ্তি , আয়কর প্রদান, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি, সরকারি কোষাগারে অর্থপ্রদান প্রভৃতি কাজ নিমিষেই সম্পন্ন করতে পারে। 

আমাদের দেশেও বর্তমানে অনেক নাগরিক সেবা খুব সহজে পাওয়া যায় । এর মধ্যে উল্লেখযো্য হলো ই-পৰ্চা, ই-বই, ই-পূর্জি, পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ, ই-স্বাস্থ্য সেবা, অনলাইনে আয়কর রিটার্ন প্রস্তুতকরণ, টাকা হস্তান্তর, পরিসেবার বিল পরিশোধ, পরিবহন ক্ষেত্র ইত্যাদি।

১৩. আউটসোর্সিং কি? পণ্য বিপণন এবং বিক্রয় ব্যবস্থাপনায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্ব বর্ণনা কর।
উত্তর: আউটসোর্সিং: ইন্টারনেটের মাধ্যমে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর জন্য ঘরে বসে অন্য দেশের কাজ করে দেওয়াকে আউটসোর্সিং বলা হয়। নিচে পণ্য বিপণন এবং বিক্রয় ব্যবস্থাপনায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্ব বর্ণনা করা হলো:

বিপণন: ব্যবসা করতে হলে পণ্য বিপণন এবং প্রচারে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রয়োগের ফলে বিপণনেও নতুন যাত্রা যোগ করা সম্ভব হয়েছে। উক্ত ক্ষেত্রগুলো হলো-
১. বাজার বিশ্লেষণ: যেকোনো নতুন পণ্য বা সেবা বাজারে চালু করার পূর্বে এ বিষয়ে বর্তমান বাজার সম্পর্ক জানার প্রয়োজন । আইসিটির মাধ্যমে এ সকল কাজ দ্রুততার সঙ্গে করা সম্ভব।
২. প্রতিদ্বন্দ্বীদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ: প্রতিদ্বন্দ্বী পণ্য ও সেবা সম্পর্কে সহজে তথ্য সংগ্রহ করা যায়।
৩. সরবরাহ: জিপিএস বা অনুরূপ ব্যবস্থাদির মাধ্যমে কম খরচে পণ্য সরবরাহের পরিকল্পনা করা যায়।
8. প্রচার: ওয়েবসাইট, ব্লগ কিংবা সামাজিক যোগাযোগের সাইটের মাধ্যমে স্বল্পমূল্যে এবং কখনো কখনো বিনামূল্যে পণ্য বা সেবার বিজ্ঞাপন প্রচার করা যায়।

বিক্রয় ব্যবস্থাপনা: ইলেকট্রনিক পয়েন্ট অব সেল হলো এমন একটি ব্যবস্থা যার মাধ্যমে বিক্রয়ের সকল তথ্য সংরক্ষণ করা যায়। এতে সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ের সুযোগ থাকে।

১৪। টেলিমেডিসিন কী? এটি কিভাবে চিকিৎসা জগতে বিপ্লব ঘটাতে পারে? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: টেলিমেডিসিন: টেলিমেডিসিন হলো টেলিফোনের সাহায্যে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ পদ্ধতি। এ ব্যবস্থায় পৃথিবীর যেকোনো প্রান্ত থেকে যে কেউ যেকোনো সমস্যায় টেলিফোনের মাধ্যমে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করতে পারে এবং চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করতে পারে।

চিকিৎসা ক্ষেত্রে এর বিপ্লব: আইসিটি প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতিকে পুরোপুরি পাল্টে দিয়ে সম্পূর্ণ নতুন নির্ভরযোগ্য একটা রূপ দান করেছে। চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটাতে টেলিমেডিসিন তথা আইসিটি যেভাবে সাহায্য করছে নিচে তা উল্লেখ করা হলো-
১. দেশের কোটি কোটি শিশুকে সঠিক সময়ে প্রয়োজনীয় রোগ প্রতিরোধক টিকা দিয়ে তাদের মৃত্যুহার কমিয়ে আনতে আইসিটি নানাভাবে সাহায্য করছে।
২. হাসপাতাল ক্ষিকে রোগ এবং রোগীর প্রয়োজনীয় তথ্যাদি সঠিকভাবে সংরক্ষণের সুযোগ দিচ্ছে।
৩. আইসিটির নানা উপকরণ ডাক্তারদের প্রেসক্রিপশন কতটা সঠিক হচ্ছে তা যাচাই করার সুযোগ দিচ্ছে।
৪ . আইসিটি প্রয়োগ করে যেকোনো সময় যেকোনো স্থান থেকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করা যায়।
৫ . তথ্য প্রযুক্তির ফলেই মানুষের জিনোম রহস্য ভেদ করা সম্ভব হয়েছে।
৬. তথ্য প্রযুক্তির নানা উপকরণ রোগীর পুরো শরীর সূক্ষ্মভাবে পরীক্ষা - নিরীক্ষা করতে এবং সঠিকভাবে রোগ নির্ণয়ে সাহায্য করছে।
৭. তথ্য প্রযুক্তির ফলে রোগের উপসর্গের পরিবর্তে কারণ খুঁজে বের করে তা অপসারণ করা যায়।

১৫। আউটসোর্সিং বলতে কী বুঝ? কর্মসৃজন ও কর্মপ্রান্তিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ভূমিকা বর্ণনা কর।
অথবা, কর্মসৃজন ও কর্মপ্রাপ্তিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ভূমিকা সংক্ষেপে লিখ।
উত্তর: আউটসোর্সিং: আউটসোর্সিং হচ্ছে কোনো প্রতিষ্ঠানের কাজ তষ্ঠানের সাহায্যে করিয়ে নিজেরা না করে তৃতীয় কোনো ব্যক্তি বা নেওয়া।
কর্মসৃজন ও কর্মপ্রাপ্তিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ভূমিকা: তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির বিপুল বিকাশের ফলে সমাজের বিভিন্ন স্তরে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন সূচিত হয়েছে। এর বিকাশের শুরুর দিকে ধারণা করা হতো স্বয়ংক্রিয়করণ এবং প্রযুক্তির প্রয়োগের ফলে বিশ্বব্যাপী কাজের পরিমাণ কমে যাবে এবং বেকারের সংখ্যা বেড়ে যাবে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে দেখা গেছে, তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশের ফলে কিছু কিছু সনাতনী কাজ বিলুপ্ত হয়েছে বা বেশ কিছু কাজের ধারা পরিবর্তন হলেও অসংখ্য নতুন কাজের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। শুধু কর্মসৃজন নয়, কর্মপ্রত্যাশীদের কাজের সুযোগ প্রাপ্তিতেও ইন্টারনেট ও তথ্যপ্রযুক্তির বড় ভূমিকা রয়েছে। পূর্বে যেকোনো ধরনের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নোটিস বোর্ড, বড় বড় সরকারি প্রতিষ্ঠানের দেয়ালে সেঁটে দেওয়া হতো। আইসিটি ও ইন্টারনেটের বিকাশের ফলে বর্তমানে ইন্টারনেটে 'জবসাইট' নামে নতুন একধরনের সেবা চালু হয়েছে। এই সঞ্চল জবসাইটে নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান সরাসরি তাদের বিজ্ঞপ্তি প্রচার করতে পারে। এছাড়া এরূপ কোনো কোনো সাইটে কর্মপ্রত্যালীগণ নিজেদের নিবন্ধিত করে রাখতে পারে।

১৬. সরকারি কর্মকান্ডে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের পুরুত্ব বর্ণনা কর।
অথবা, সরকারি কর্মকাণ্ডে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার লিখ।
উত্তর: সরকারি কর্মকাণ্ডে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার হলো:
১. সরকারি বিভিন্ন তথ্যাদি যেমন-নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি নোটিস, বিভিন্ন দিকনির্দেশনা, দরপত্র, নিয়মকানুন এখন ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
২. আইন ও নীতিমালা প্রণয়ন এবং সংশোধন সম্পর্কে জনগণের মতামত জানতে ইন্টারনেট ব্যবহৃত হয়।
৩. সরকারি কোনো গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা বা কোনো দিবস যেমন- টিকা দিবস বা টিকা প্রদান সম্পর্কে মোবাইল ফোনের ক্ষুদে বার্তার (SMS) মাধ্যমে সরাসরি জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়।
৪. দেশের কোনো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের ব্যাপারে কলসেন্টার থেকে কল করা কিংবা ই-মেইলের মাধ্যমে জনসাধারণের মতামত নেওয়া হয়।
৫. জনগণের দোরগোড়ায় সরকারি সেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়। এজন্য মোবাইল ফোন, রেডিও, টেলিভিশন এবং ইন্টারনেটের সাহায্য নেওয়া হয়।
তাই বলা যায় যে, সরকারি কর্মকাণ্ডে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের গুরুত্ব অনেক বেশি।

১৭. ICT এর পূর্ণরূপ কী? মহান মুক্তিযুদ্ধে আইসিটির গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: ICT এর পূর্ণরূপ Information and Communication Technology. ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মুক্তিযোদ্বাদেরকে সংকেত দেওয়ার জন্য আইসিটি যন্ত্র রেডিও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কেননা সেই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রকাশ্যে বা সরাসরি কোনো ধরনের শত্রুবাহিনীর গোপন কৌশলের তথ্য দেওয়া যেতো না।
ফলে যোগাযোগের কোনো উপায়ই ছিল না, তাই মুক্তিযোদ্ধাদের অনুরোধে আকাশবানী রেডিও থেকে ১৩ ই আগস্ট বেজে উঠে বিখ্যাত গায়ক পঙ্কজ মল্লিকের গাওয়া একটি গান “আমি তোমায় যত শুনিয়েছিলাম পান"। সেই গানটি একটি ছিল একটি সংকেত, সেটি শুনে নৌ কমান্ডোরা বুঝতে পেরেছিল তাদের এখন আঘাত হানার সময় এসেছে। এভাবেই আইসিটি যন্ত্র রেডিওটি মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বাধীনতা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

১৮. আইসিটি বিকাশে নাগরিকগণ কী কী সেবা ভোগ করতে পারে? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: আইসিটি বিকাশে নাগরিকগণ যেসকল সেবা ভোগ করতে পারে তা নিচে ব্যাখ্যা করা হলো-
১. ই - পৰ্চা: জমিজমার বিভিন্ন রেকর্ড সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন জমির দলিলের জন্য আবেদন করা এবং অনুলিপি সংগ্রহের জন্য ই - পর্চা ব্যবস্থা রয়েছে।
২. ই - বুক: অনলাইনে পাঠ্যপুস্তক প্রাপ্তি এবং পড়ার জন্য ই-বুক ব্যবহৃত হয়।
৩. পরীক্ষার ফল প্রকাশ: পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল এখন অনলাইন ওয়েবসাইটে এবং মোবাইল ফোনে পাওয়া যায়।
৪. ই - স্বাস্থ্যসেবা: ই-স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় চিকিৎসা প্রদানে মোবাইলভিত্তিক টেলিমেডিসিন সেবা চালু হয়েছে।
৫. টাকা স্থানান্তর: পোস্টাল ক্যাশ কার্ড, মোবাইল ব্যাংকিং, Electronic money transfer system ইত্যাদির মাধ্যমে বর্তমানে দেশে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে অর্থ প্রেরণ দ্রুত ও সহজ হয়েছে।
৬. অনলাইনে বিল পরিশোধ: বর্তমানে বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাস এর বিল বা মোবাইল পরিসেবার বিল অনলাইনে পরিশোধ করা যায়।
৭. অনলাইনে টিকিট: ট্রেন বা বিমানের টিকিটও বর্তমানে মোবাইল এবং ইন্টারনেটের মাধ্যমে করা যায়।

১৯. তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কী? দৈনন্দিন জীবনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার লিখ।
উত্তর: তথ্য সংগ্রহ, তথ্যের সত্যতা ও বৈধতা যাচাই, সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াকরণ, আধুনিকীকরণ, পরিবহন, বিতরণ ও ব্যবস্থাপনার সাথে সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তিকে বলা হয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি। মূলত তথ্য প্রযুক্তি হলো প্রযুক্তির একটি শাখা; যা বিশেষত কম্পিউটারের সাহায্যে তথ্য বিতরণ, প্রক্রিয়াকরণ এবং সংরক্ষণ করার সাথে সংশ্লিষ্ট। দৈনন্দিন জীবনে তথ্য প্রযুক্তির নানামুখী ব্যবহার রয়েছে। এরকম কয়েকটি ব্যবহার নিচে দেওয়া হলো:
১. মোবাইল ফোন ব্যবহার করে টাকা পাঠানো এবং গ্রহণ।
২. মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ঘরে বসেই পরীক্ষার ফলাফল জানা।
৩. অনলাইন এবং ইন্টারনেট ব্যবহারে ঘরে বসেই চাকরির দরখাস্ত করা এবং প্রবেশপত্র নামানো।
৪. অনলাইন টিকেটিং সিস্টেম এর মাধ্যমে ঘরের বাইরে না গিয়েই বা স্টেশনে না গিয়েই ট্রেনের এবং প্লেনের টিকেট কিনতে পারা।
৫. অনলাইনে ইন্টারনেট এর সহায়তায় সব ধরনের পত্রিকা (যা ইন্টারনেটে থাকে) পড়তে পারা।
৬. ইন্টারনেট- এ ঘরে বসেই প্রয়োজনীয় পণ্যের অর্ডার দেওয়া এবং বিল পে করা।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url